যশোরের মনিরামপুরে বৃষ্টিভেজা গভীর রাতে গোয়ালের তালা ভেঙে চারটি গরু নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল একদল চোর। তবে গরুর আর্তচিৎকার এবং মালিকের অদম্য সাহসিকতায় শেষ পর্যন্ত তিনটি গরু রক্ষা পেলেও একটি ষাঁড় নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় চোরেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার পলাশী গ্রামে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম, যিনি পলাশী গ্রামের বাসিন্দা এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী। তার শ্বশুর নূর মোহাম্মদ জানান, “গোয়ালে তিনটি গাভি, একটি ষাঁড় ও একটি বাছুর তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। রাতভর মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে রাত প্রায় ২টার দিকে চোরেরা তালা ভেঙে বাছুরটি রেখে বাকি চারটি গরু বের করে নিয়ে যায়।”
বাছুরটির করুণ ডাকে ঘুম ভেঙে যায় জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রীর। দ্রুত টর্চলাইট হাতে নিয়ে পাশের বাগানে ছুটে যান জাহাঙ্গীর। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, তিনটি গরু গাছের সাথে বাঁধা এবং চোরেরা একটি ষাঁড়কে গাড়িতে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন সাহসিকতার সঙ্গে চিৎকার শুরু করেন জাহাঙ্গীর। এসময় চোরেরা লাঠি হাতে জাহাঙ্গীরের দিকে তেড়ে এলে তিনি ভয় পেয়ে পিছু হটেন। এই সুযোগে চোরেরা তিনটি গরু ফেলে রেখে, প্রায় লাখ টাকা মূল্যের ষাঁড়টি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে সকালে আমি সেখানে যাই। চারটি গরু নিয়ে যাওয়ার সময় মালিকের বাধায় কেবল একটি নিতে পেরেছে চোরেরা। ঘটনাস্থলের পাশে একটি সন্দেহজনক সাইকেল পড়ে থাকতে দেখা গেছে, যেটি চোর দলের কারও হতে পারে।”
খেদাপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাবুল রহমান এ বিষয়ে বলেন, “ঘটনার রাতে আমি ওই এলাকায় টহলে ছিলাম। কেউ বিষয়টি জানায়নি। আমরা দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
এই ঘটনায় এলাকার কৃষকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে, জাহাঙ্গীরের সাহসিকতার প্রশংসা করছেন স্থানীয়রা।