১৯৮ তম ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া “ঈদগাহ”

New-Project-7-10.jpg

১৯৮ তম ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া "ঈদগাহ"

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৮ তম ঈদুল ফিতরের জামাত। প্রতিবছর এ ঈদগাহ মাঠে আশেপাশের জেলা ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে কয়েক লাখ মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। ঈদের দিন সকাল ১০ টায় একটি মাত্র জামাতের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসন। দেশের বৃহত্তম এ ঈদ জামাতে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আবারো ইমামতি করবেন মাওলানা মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ্। ঈদ জামাত ঘিরে নেয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সবশেষ তুলির আঁচড়ে রংয়ের প্রলেপ ছুঁয়ে যাচ্ছে ঈদগাহ মাঠের সীমানা প্রাচীরে। নামাজের সময় মুসুল্লিদের কাতার সোজা করার জন্য দাগ কাটাও শেষ। প্রতি বছর এভাবেই কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতের জন্য নেওয়া হয় ব্যপক প্রস্তুতি। এবারও সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে স্থানীয় এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের কথা মাথায় রেখে। ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের নামাজ চলাকালীন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় দুই পুলিশ সদস্য সহ নিহত হয় চার জন। সেই থেকে ঈদের জামাতে বাড়তি নিরাপত্তার উপর জোর দেয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তাব্যবস্থায় পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি ছাড়াও সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে।

জায়নামাজ ছাড়া কোনকিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ না করার জন্য মুসুল্লিদের উৎসাহিত করছে জেলা প্রশাসন। বরাবরের মতো দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চলবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

১৮২৮ সালে প্রথম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম সোয়ালাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় “সোয়ালাখিয়া”। পরবর্তীতে যা শোলাকিয়া নামে দেশে বিদেশে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪-২০০৯ সাল পর্যন্ত শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের চাপে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. শাহ কামাল তাকে বেআইনিভাবে সরিয়ে দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ ১৫ বছর শোলাকিয়া ইমামের পদ থেকে সরিয়ে রাখা হয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আবুল খায়ের মুহাম্মদ নুরুল্লাহর (রহ.) সন্তান ও কিশোরগঞ্জের সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেম মুফতি মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ সাইফুল্লাহকে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওবার পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম পরিবর্তনেরও দাবি ওঠে। এর পরই মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ সাইফুল্লাহকে শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয়।

Leave a Reply

scroll to top