মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। আজ বুধবার (২৮ মে) এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
দূতাবাস জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত ভঙ্গের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল হতে পারে, যা ভবিষ্যতে তাদের দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ চিরতরে বন্ধ করে দিতে পারে। একইসঙ্গে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই প্রক্রিয়া আরও জোরদার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মার্কিন দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, যেসব কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল হতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
১. শ্রেণীকক্ষে অনুপস্থিতি বা পড়ালেখা ছেড়ে দেওয়া: নিয়মিত ক্লাস না করলে বা কোর্স থেকে ড্রপআউট হলে ভিসা বাতিল হতে পারে।
২. অনুমোদন ছাড়া কাজ করা: স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত ভেঙে অনুমোদন ছাড়া কাজ করলে ভিসা বাতিল হতে পারে।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন বা কোর্স লোড কমানো: কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোর্স লোড পরিবর্তন করলে ভিসার সমস্যা হতে পারে।
৪. অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা আইন লঙ্ঘন: যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে, এমনকি ছোটখাটো ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করলেও ভিসা বাতিল হতে পারে।
৫. জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি: যদি কোনো শিক্ষার্থীর কার্যকলাপ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হয়, তাহলে তার ভিসা বাতিল হতে পারে।
৬. মিথ্যা তথ্য প্রদান: ভিসা আবেদনপত্রে বা সাক্ষাৎকারে ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে ভিসা বাতিল হতে পারে।
৭. শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘাটতি: অ্যাকাডেমিক পারফরম্যান্স খারাপ হলে বা ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলে ভিসা বাতিলের ঝুঁকি থাকে।
৮. আর্থিক সামর্থ্যের অভাব: যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা ও জীবনযাত্রার খরচ বহনের পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য না থাকলে ভিসা বাতিল হতে পারে।
৯. রাজনৈতিক কার্যকলাপ: ক্যাম্পাসে সরকারবিরোধী বা বিতর্কিত রাজনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হলে ভিসা বাতিল হতে পারে।
১০. পূর্ববর্তী অভিবাসন আইন লঙ্ঘন: অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের রেকর্ড থাকলে ভিসা বাতিল হতে পারে।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একটি কূটনৈতিক বার্তায় জানিয়েছেন যে, ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, শিক্ষার্থী ভিসা ও বৈদেশিক বিনিময় কর্মসূচির আওতাধীন ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হবে। রুবিও উল্লেখ করেছেন যে, এই বর্ধিত যাচাই প্রক্রিয়া মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোর ওপর “গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব” ফেলবে।
এই নতুন নির্দেশনাগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনারত বা ইচ্ছুক বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা বহন করছে। শিক্ষার্থীদের ভিসার শর্তাবলী মেনে চলার গুরুত্ব এবং মার্কিন প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান নজরদারির বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে।