বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে এলেও এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ শুক্রবারও (৩০ মে) দেশের অনেক স্থানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতে সম্ভাবনা রয়েছে।
নিম্নচাপটি সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার (পটুয়াখালীর কলাপাড়া) মধ্য দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করলেও এর রেশ এখনো কাটেনি। বিশেষ করে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকায় জোয়ারের তাণ্ডবে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত জোয়ারের তীব্রতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এই সময়ে সৈকতে কিছু পর্যটককে বিপজ্জনকভাবে গোসল করতে দেখা গেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সৈকতের আশপাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, কারণ যেকোনো মুহূর্তে তাদের দোকানপাট তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা প্রস্তুতকারী সংস্থার (সিপিপি) স্থানীয় টিম লিডার মো. সোলাইমান বিশ্বাস জানান, তাদের উপজেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি, তবে সিপিপির সকল সদস্য প্রস্তুত রয়েছেন।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা মো. শিরু মোল্লা বর্তমান সমুদ্রের আগ্রাসী চেহারাকে অতীতের ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “আজকে চার দিন ধরে লাগামহীন বৃষ্টি হচ্ছে, সঙ্গে প্রচণ্ড বাতাস এবং জোয়ারের পানি তো রয়েছেই। এই এলাকার অনেক ফসলের খেত, মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। উপকূলের মানুষ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।”
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়া অতিক্রমকারী গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে সাতক্ষীরা ও আশপাশের এলাকায় স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী নিশ্চিত করেছেন যে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোতে এখনো বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে এবং যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।