অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে ফিরলেন এক যাত্রী

অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা

অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা। ছবি: সংগৃহীত

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গুজরাতের অহমদাবাদে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে লন্ডনের গ্যাটউইক অভিমুখী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে প্রাণে বেঁচে গেছেন মাত্র একজন যাত্রী—সিট নম্বর ১১এ-তে বসা ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বকুমার রমেশ, যিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ ও একজন কানাডীয় নাগরিক। যাত্রীসহ মোট আরোহী ছিলেন ২৩০ জন, সঙ্গে ১২ জন বিমানকর্মী (দুইজন পাইলটসহ)।

বিমান ভেঙে পড়ে হাসপাতালের হোস্টেলে

সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় বিমানটি ভেঙে পড়ে মেঘানিনগর এলাকার বিজে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের হোস্টেলের ওপর। সেখানে প্রায় ৫০ জন চিকিৎসক বাস করতেন। দুর্ঘটনায় অন্তত পাঁচজন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের লেজের অংশ নিচের দিকে হেলে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে আগুনের গোলায় পরিণত হয়। ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার ডট কম যাচাই করতে পারেনি, তবে ঘটনার ভয়াবহতা স্পষ্ট।

ডিজিসিএ (DGCA) জানিয়েছে, বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়াল, যাঁর ৮,২০০ ঘণ্টার উড়ান অভিজ্ঞতা রয়েছে। সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার (অভিজ্ঞতা: ১,১০০ ঘণ্টা)। উড্ডয়নের পরপরই পাইলট ‘Mayday’ সংকেত পাঠালেও এরপর আর যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি। মাত্র ৮২৫ ফুট উচ্চতায় ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়ে বিমানটি।

অহমদাবাদের পুলিশ কমিশনার জি এ মালিক সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানান, ১১এ আসনের যাত্রী বিশ্বকুমার রমেশকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাঁর চিকিৎসা চলছে। তিনিই এই দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত।

দুর্ঘটনায় জীবিত একমাত্র যাত্রী

দুর্ঘটনায় জীবিত একমাত্র যাত্রী। ছবি: সংগৃহীত

এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা প্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে ১ কোটি রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত বিজে মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল পুনর্নির্মাণেও সাহায্য করবে টাটা গ্রুপ।

চন্দ্রশেখরন বলেন, “এই শোকের মুহূর্তে কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়। আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”

অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু কিন্জারাপু দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করেন। তিনি জানান, সব এজেন্সিকে সমন্বিত ও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি চিকিৎসা টিম এবং অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস রাতভর উদ্ধার ও সহায়তায় নিয়োজিত রয়েছে।

Leave a Reply

scroll to top