বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপের অভাবে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ হতাশা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. মোশাররফ জানান, ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল বৈঠক করে। একই দিনে আরও দুটি দল উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তবে আলোচনার পরে সরকারপক্ষ থেকে যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে, তা অস্পষ্ট এবং বিভ্রান্তিকর বলেই প্রতিভাত হয়েছে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় বিএনপি ও সাধারণ জনগণ হতাশ।
তিনি বলেন, “আমরা কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, এখনও চাই না। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এটি জনগণের প্রধানতম প্রত্যাশা এবং সরকারকে সেটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
ড. মোশাররফ বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে একযোগে চলতে পারে। তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী শক্তির পতন হয়েছে জনগণের রক্ত দিয়ে, কিন্তু আজকের সরকারের কর্মকাণ্ড সেই অর্জনের ওপর প্রশ্ন তুলেছে।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের পক্ষে আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও সরকার এখনো তার শপথগ্রহণে উদ্যোগী হয়নি। এটি সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবের প্রমাণ।
বিএনপির এ নেতা বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবি জনগণের স্বার্থেই করা হয়েছে। সরকার যদি এই জনআকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে, তবে বিএনপির পক্ষ থেকে সহযোগিতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করা বাস্তবসম্মত নয়, কারণ ফেব্রুয়ারিতে রয়েছে রমজান মাস, এসএসসি পরীক্ষা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা। সরকার ‘সংস্কারের’ অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি দৃঢ়ভাবে দাবি জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে একটি স্পষ্ট, সময়নির্ধারিত রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। জনগণের এই প্রত্যাশা পূরণে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে দেরি না করে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় সরকার ও জনগণের মাঝে বিশ্বাসের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।