চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা সীমান্তে টহলরত অবস্থায় বজ্রাঘাতে এক বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সন্ধ্যার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও পাঁচজন সদস্য আহত হন বলে নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
নিহত বিজিবি সদস্যের বাড়ি রাজশাহী
মারা যাওয়া রিয়াদ হোসেন (৩২) জামালপুর ৩৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দাঁতভাঙ্গা বিওপির সিপাহি ছিলেন। তিনি নেত্রকোনা জেলার আটাপাড়া উপজেলার দিয়ারা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে বলে জানা গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে আহত পাঁচজনকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রৌমারি হাসপাতাল এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আহতরা হলেন- বিজিবি সদস্য হাবিলদার জসিম (৫২), সিপাহি নাদিম (২৮), সিপাহি শাহীন (২৮) ও আনসার সদস্য ফেরদৌস হোসেন (৩৬)। আহত আরেকজনের নাম জানা যায়নি।
বিজিবি সূত্রের খবর
বিজিবি সূত্র জানায়, প্রতিদিনের মতো বুধবার বিকেলেও সীমান্তে নিয়মিত টহল চলছিল। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। বুধবার রাত ১২টায় রৌমারী সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা মেইন পিলার ১০৫৬ এলাকার ছাটকড়াইবাড়ী-ধর্মপুর সীমান্তে টহল দিচ্ছিল বিজিবির একটি দল। এ সময় বৃষ্টি ও বজ্রঝড় শুরু হলে তারা একটি টিনশেডে আশ্রয় নেন। সেখানে আকস্মিক বজ্রাঘাত হয়। এতে ছয় জন আহত হন। দুর্ঘটনার পর পরই শিবগঞ্জ থানা পুলিশ, বিজিবি কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দ্রুত তাদের রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিজিবি সদস্য রিয়াদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে গিয়েছিলাম। বজ্রাঘাতে বিজিবির এক সদস্য মারা গেছেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান। আহতদের মধ্যে দুই জনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের রৌমারী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
বিজিবির পক্ষ থেকে নিহত সদস্যের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বিজিবি মহাপরিচালক গভীর শোক প্রকাশ করে পরিবারকে সকল প্রকার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
বুধবার মধ্যরাত থেকে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্থানে তীব্র বজ্রঝড়সহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বজ্রঝড়ের তীব্রতায় শিশুসহ মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বজ্রপাতের এই ঘটনায় সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা এবং দুর্যোগকালীন টহল প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে ভাবনার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।