রোববার, ৪ মে সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ১০-১২ জন সন্ত্রাসী তাঁর গাড়িতে হামলা চালায়, যার ফলে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং হাসনাতের হাত রক্তাক্ত হয় ।
প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ
ঘটনার পরপরই এনসিপির নেতাকর্মীরা গাজীপুর ও ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। দলটির নেতারা এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগপন্থী সন্ত্রাসীদের দায়ী করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান । এছাড়া, ঢাকায় এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় ।
তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, হামলার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাত থাকতে পারে এবং তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
পুলিশি তদন্ত
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে প্রথমে দুজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আরও দুইজনকে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং হামলার পেছনে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক জানান, হামলায় হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং তিনি হাতে আঘাত পান। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এ এম নাসির উদ্দিন জানান, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং দোষীদের শনাক্ত করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে ।
হামলার ঘটনায় গ্রেফতার
হামলার ঘটনায় মো. নিজাম উদ্দিন ও মাসুম আহমেদ দিপু নামে দুজনকে আটক করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। রোববার হামলার ঘটনার পর পুলিশের অভিযানে তাদের আটক করা হয় বলে জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. রবিউল হাসান। আটককৃত মো. নিজাম উদ্দিন গাজীপুর মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা এবং মাসুম আহমেদ দিপু কাশিমপুর থানা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
হাসনাত আব্দুল্লাহ এনসিপির একজন প্রভাবশালী নেতা, যিনি আওয়ামী লীগ ও ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি জুলাই বিপ্লবের আদর্শে বিশ্বাসী এবং তার ওপর হামলাকে অনেকেই সেই আদর্শের ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন । হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।