তেহরানে ইসরায়েলের হামলা, রেভল্যুশনারি গার্ডস প্রধান নিহত!

তেহরানে ইসরায়েলের হামলা

তেহরানে ইসরায়েলের হামলা। ছবি: বিবিসি

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের রাজধানী তেহরান এবং আশপাশের এলাকায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার রাতভর চালানো এই হামলার লক্ষ্য ছিল দেশটির পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলো। ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস বাহিনীর প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি।

রাতভর চলা এই হামলায় রাজধানী তেহরানে অবস্থিত ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি)-এর সদর দপ্তরেও আঘাত হানা হয়। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেনারেল হোসেইন সালামি। পরে শুক্রবার সকালে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ও বার্তা সংস্থাগুলো তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।

২০১৯ সাল থেকে আইআরজিসির কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন হোসেইন সালামি। ইরানের সামরিক কৌশল এবং পারমাণবিক কর্মসূচিতে তার ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে ইরানের প্রভাব বিস্তারে সামরিক তৎপরতার অন্যতম স্থপতি ছিলেন তিনি।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই হামলার ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও ইসরায়েলি গণমাধ্যমে “অপারেশন রাইজিং লায়ন” নামে সামরিক অভিযানের কথা উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে এবং অন্তত কয়েকজন শীর্ষ বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।

ইরানে এই হামলার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও রেভল্যুশনারি গার্ডস বলেছে, এই হত্যার জবাব কঠিন ও নির্ধারিত সময়েই দেওয়া হবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ এই সামরিক কমান্ডারের মৃত্যুতে গোটা দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিশ্বব্যাপী এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে। তেলের দাম বেড়েছে ৭–৮ শতাংশ পর্যন্ত। মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির শঙ্কায় বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সতর্কতা জারি করেছে, তবে সরাসরি এই হামলায় তারা জড়িত নয় বলে জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হোসেইন সালামির মৃত্যু শুধু ইরানের জন্য নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা কাঠামোর জন্য একটি বড় ধাক্কা। তার মৃত্যু ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের দুয়ার খুলে দিল—যার পরিণতি হতে পারে আরও ভয়াবহ।

Leave a Reply

scroll to top