দেশে ক্রমশই ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) সারা দেশে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে স্বস্তির খবর হলো, এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) সর্বোচ্চ ২৬১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৯০ শতাংশ। এছাড়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১ জন এবং ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ৫ হাজার ৩১৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে- ৬০.১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৯.৯ শতাংশ নারী। এ বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েক বছর ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল, এবং একই সময়ে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এডিস মশা সাধারণত স্বচ্ছ ও জমে থাকা পানিতে বংশবিস্তার করে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, জমে থাকা পানি অপসারণ করা এবং মশার আবাসস্থল ধ্বংস করা জরুরি।
একই সাথে, দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার এবং মশা তাড়ানোর স্প্রে ব্যবহার করারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এসময় বিনা প্রয়োজনে বাইরে না বের হওয়ার জন্য সতর্কও করেছেন বিশেষজ্ঞরা।