দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ২৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং একই সময়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ১৩৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৩৫ জন এবং খুলনা বিভাগে ৮ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়া, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ জন, রংপুর বিভাগে ৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যে, ডেঙ্গুর প্রকোপ রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে।
একই সময়ে সারাদেশে ২২২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৫ হাজার ২৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। এটি কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও, নতুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে সবমিলিয়ে ৫ হাজার ৯৮৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের (২০২৪) তুলনায় চলতি বছরের শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের জন্য চিন্তার কারণ।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারও আগে ২০২৩ সালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ; ওই বছর মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই পরিসংখ্যানগুলো বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও গুরুত্বের সাথে বিবেচনার তাগিদ দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার এবং মশা নিধনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। বাসা-বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা, মশারির ব্যবহার এবং ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
