রাজধানীবাসীর মোটাদাগে সমস্যা তিনটি। এগুলো হচ্ছে- যানজট, শব্দ ও বায়ুদুষণ। এসমস্যাগুলো নিয়ে ঢাকার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নেয় কিন্তু গৃহীত উদ্যোগ ও পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে সিরিয়াস হয় না তারা। ফলে সমস্যাগুলো থেকেই যাচ্ছে।
ধরুণ আমরা শুধু যানজটের কথাই বলি, ঢাকার যানজট দূর করা নিয়ে কেউ আশাবাদী নন। কারণ, এ বিষয়ে প্রশাসন সিরিয়াস নয়। আমরা যারা ঢাকার রাস্তায় চলি, তারা প্রতিদিনই দেখছি, রাস্তার দু’পাশে যে ফুটপাত (পধচারীদের হেঁটে চলার জন্য বরাদ্দকৃত রাস্তা) রয়েছে তাতে পথচারীরা হাঁটতে পারছেন না। কারণ, পথচারীদের হাঁটার পথ বন্ধ করে বসানো হয়েছে ছোট ছোট দোকান। এছাড়াও ফুটপাতে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে হকাররা। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসানোর পেছনে রয়েছে আরেকটি বিশেষ শক্তিশালী গ্রুপ, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে এই গ্রুপটি আর্থিকভাবে সুবিধাভোগীও।
সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে দৃষ্টি দিলেই দেখতে পারবে শুধু ফুটপাতেই নয়, মূল সড়কজুড়ে বসানো হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সচিবালয় থেকে খুবই কাছে গুলিস্তান। এই গুলিস্তানে হাঁটারও চান্স নেই। এ সড়কে যানবাহনের গতি পাঁয়ে হাটার গতির চাইতে অনেক স্লো (ধীর), এর কারণ কী? কারণ হচ্ছে মূল সড়কের ৫০ শতাংশের বেশি জায়গাজুড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসানো হয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই। একসময় মানুষ মনে করতে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় রয়েছে, এসব দোকানীর পেছনে রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে, যারা নানাভাবে ম্যানেজ হয়ে উচ্ছেদে বাধা দেবে। কিন্তু এখন তো বাস্তবতা ভিন্ন। কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় নেই। যেসব দল রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে তারাও চায় দেশটা ভালো চলুক ও সুন্দর চলুক, ফলে এখন সড়ক থেকে এসব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ না করার যুক্তি কি?
শুধু কি গুলিস্তান? রাজধানীর মিরপুর এক নম্বর, মৌচাক, ফার্মগেট নিউমার্টেক যে স্থানেই যান না কেন দৃষ্টি দিলেও দেখা যাবে রাস্তা দখল করে বসানো হয়েছে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঢাকার সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার এখনই সুবিধাজনক সময়। কারণ এখন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় নেই। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি সেনাবাহিনীর সমর্থনে রয়েছে। আবার সেনা বাহিনীর কাছে রয়েছে বিচারিক ক্ষমতাও। ফলে এ পরিবেশ কাজে লাগিয়ে রাজধানীর সব অবৈধভাবে দখল করা সড়ক ও ফুটপাত এখনই উদ্ধার করতে হবে। আর এটা করা গেলে যানজট অন্তত অর্ধেক কমে আসবে।