পিরোজপুর জেলা শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে জড়িতরা হলেন– বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মো. ইমরান শেখ (২৩), শাহেনেওয়াজ অভি (২৬) ও মো. মুঈন উদ্দিন (২৭) অপরদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মুসাব্বির মাহমুদ সানি (২৯) ও তার ভাই সানজিদ (১৯)।
এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুঈন উদ্দিন বলেন, আমরা তারাবির নামাজ শেষে পুরাতন বাস স্টান্ডে চা খেতে আসি, আজকে হঠাৎ কোথা থেকে সানি এসে অভিকে বাজে কথা বলে। এক পর্যায়ে বাক বিতন্ডা শুরু হয় এবং আমাদের উপর হামলা করে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সানি অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা প্রথমে তাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে, তখন তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। সে সময় তার ভাই সানজিদকেও মারধর করা হয়। এ হামলার ফলে সানির পিঠ, হাত এবং সানজিদের গলা ও পা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
এ বিষয়ে শাহনেওয়াজ অভির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুসাব্বির মোহম্মদ সানি জুলাই বিপ্লবের সময় একদিনও আন্দোলন করে নাই, ফেসবুকে কোন পোস্ট আপলোড দেয়নি। পিরোজপুরের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাস রেজাউল করিমের সাথে মিশে আমাদের সব তথ্য পাচার করছে। যার সমস্ত ডকুমেন্ট আমরা পেয়েছি। ৫ আগস্ট এর পরে নিজেরা ই একটি সমন্বয়ক কমিটি তৈরি করে পিরোজপুরের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করতে থাকে। আমরা বাধা দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে থাকতে না পেরে সে ঢাকায় গিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যোগ দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা পুরাতন বাস স্টান্ডে বসে একসাথে চা খাচ্ছিলাম হঠাৎ এসে আমাদের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। সে এর আগেও ১৭ই সেপ্টেম্বর শিল্পকলা একাডেমীতে হামলা করে যেখানে উপস্থিত ছিলেন হান্নান মাসুদ ও রিয়ান ভাই তাদের সামনে আমাদের ছোট ভাই ইমরানের উপর হামলা করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সানি তারাবির নামাজ শেষে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পর ৫/৭ জনের একটি সশস্ত্র দল লোহার পাইপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আকস্মিক হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
হামলার খবর পেয়ে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ২ ভাইকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. রাজীব পাইক জানান, আহতদের মধ্যে সানির আঘাতের পরিমাণ বেশি। এক্সরে রিপোর্টের মাধ্যমে তার আঘাতের ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সমাজের বিশিষ্টজনরা এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান জানান, হামলার ঘটনাটি শুনে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।