ইসরায়েলি হামলায় এক দিকে নিহত প্রায় অর্ধ লাখ অন্য দিকে বিধ্বস্ত একমাত্র ক্যানসার হাসপাতাল

কব.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

প্রায় দেড় বছর যাবৎ গাজায় ইসরায়েলি হামলা  চলছে। মাঝে অল্প কিছু দিন যুদ্ধবিরতি থাকলেও ইসরায়েল অঞ্চলটিতে আবারও হামলা শুরু করেছে। গাজার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতাল বিমান হামলায় গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। তুর্কিয়ের সহায়তায় নির্মিত হাসপাতালটি সেন্ট্রাল গাজায় অবস্থিত।

এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে তুর্কিয়ে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তুর্কি-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতালটি ধ্বংস করায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে আঙ্কারা। বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার হাসপাতালে হামলার মাধ্যমে ইসরাইলের হিংস্র নীতি প্রকাশ পায়। এই হামলায় মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৬১৭ জন। এ ছাড়া আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন। একই সময়ে, হামলায় নিখোঁজ হয়ে গেছেন প্রায় ১৪ হাজার।

প্রসঙ্গত, ইসরাইলি হামলায় মঙ্গলবার ভোর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০৬ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ২০০ শিশু রয়েছে। আর আহত হয়েছেন ৯০৯ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ খবর জানিয়েছে।

ইসরাইল নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। ইসরাইলি বিমান থেকে আবাসিক এলাকাগুলোতে লিফলেট ফেলা হয়েছে, যাতে উত্তরের বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুন শহর, গাজা সিটির শিজাইয়া জেলা এবং দক্ষিণে খান ইউনিসের পূর্ব প্রান্তের শহরগুলোর বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গাজাকে বসবাসের অনুপযোগী করতে এবং জোরপূর্বক এর বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এমন হামলা চালানো হচ্ছে।

মন্ত্রণলয় আরও জানায়, ইসরাইলের বেআইনি হামলা ও নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার হাসপাতালগুলোর ভেতরের পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত কঠিন। উত্তর গাজা ও গাজা শহরের আবাসিক ভবনগুলোর ওপর লাগাতার হামলার ফলে বিপুলসংখ্যক আহত ও নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।

গাজা উপত্যকার অন্যান্য অংশেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। একাধিক বিমান হামলায় আরও অনেক আবাসিক ভবন, জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য স্থাপনা এবং সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে, যেখানে মানুষ নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিল, অথচ আকস্মিক বোমা হামলার হাত থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না।

Leave a Reply

scroll to top