ডেমরায় শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছেন না লাখো মানুষ। শেখ হাসিনার আমলে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়কের চৌরাস্তায় অবস্থিত ৭২ বছরের ঐতিহ্যবাহী শহিদ মিনারটি ভেঙে ফেলে তমা গ্রুপ। এরপর তা পুনর্নির্মাণ না করেই চলে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে এখন বিলবোর্ড তৈরি করা হয়েছে যা দেখে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডেমরাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, লাখো মানুষের প্রাণের ওই শহিদ মিনারটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়ক উন্নয়ন কাজের সময় ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তখন এলাকাবাসী বাধা দিলে তমা গ্রুপ পরে স্থান নির্বাচন করে শহিদ মিনারটি পুনর্নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তাদের কথা রাখেননি। দুই বছর অতিবাহিত হলেও এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। ইতোমধ্যে কাজ শেষ করে চলে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন ও ম্যানেজার মো. সেলিম জানান, সাবেক দুই কাউন্সিলরের স্থান আপত্তির কারণে পুনর্নির্মাণ কাজটা করা যায়নি।
এলাকার প্রবীণরা জানান, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পরপরই ডেমরার চৌরাস্তায় রাষ্ট্রায়ত্ত লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের কর্মচারী ও শ্রমিকদের সমন্বয়ে পাটকল কর্তৃপক্ষ শহিদ মিনারটি নির্মাণ করেছিল। তারপর থেকে ডেমরা ও যাত্রাবাড়ীর শতাধিক স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার লক্ষাধিক শিক্ষার্থী এই শহিদ মিনারে ফুল দিতে আসতেন।
এ বিষয়ে তমা গ্রুপের পরিচালক প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন ও ম্যানেজার মো. সেলিম একইরকম তথ্য দিয়ে বলেন, শহিদ মিনারটি অবশ্যই নির্মাণ করে দেওয়ার কথা ছিল। তবে স্থান জটিলতা ও সাবেক দুই কাউন্সিলরের স্থান আপত্তির কারণে পুনর্নির্মাণের কাজটা পিছিয়েছে। বর্তমানে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়কের কাজ শেষ হওয়ায় আমরা চলে এসেছি। ওখানে আমাদের আর কোনো কাজ নেই।
ডেমরা থানা এলাকার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মো. মিজানুর রহমান জানান শহিদ মিনারটি পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা না করে ফাঁকি দেওয়া জাতিসত্তার ওপর আঘাত হানার মতোই। তমা গ্রুপ এটি পুনর্নির্মাণ না করে চলে যাওয়ার বিষয়টি সড়ক বিভাগের দেখা উচিত ছিল।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. ইব্রাহীম খলিল বলেন, শহিদ মিনারটি এ অঞ্চলের জীবন ও সংস্কৃতির একটি বিরাট অংশ। তাই যত দ্রুত সম্ভব পুনর্নির্মাণ করা এটি খুবই জরুরি। এ বিষয়ে আমি ঢাকা সড়ক বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।