২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘বাংলাদেশ প্যানারোমা’ বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে প্রদর্শিত হবে ‘নীলপদ্ম’।
যৌনপল্লির নারীদের জীবন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তৌফিক এলাহী। যৌনকর্মীদের নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে বড় পর্দায় কিছু নির্মাণের স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি।
সিনেমাটিতে নীলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রুনা খান। চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং, বলেছেন এ অভিনেত্রী। কতটা নীলা হয়ে উঠতে পেরেছিলেন প্রশ্নে রুনা খান বলেন, ‘আমি সব সময় বলি, আমি ডিরেক্টরস আর্টিস্ট। প্রতিটি দৃশ্যে চেষ্টা করি তাঁরা কী চাচ্ছেন, সেই অনুযায়ী ডেলিভারি দিতে। “নীলপদ্ম” সিনেমায় নীলা চরিত্রে আমি যতটা দিতে পেরেছি, এর পুরো কৃতিত্ব নির্মাতা ও সহশিল্পীদের, সর্বোপরি আমার পুরো টিমের।’
নির্মাতার ভাষ্য, ‘দৌলতদিয়ার পল্লিতে কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করা হয়েছে। এই কাজগুলোর জন্যও আমার সেখানে যেতে হয়েছে, তাই জায়গাটা আমার পরিচিত, খুব কাছ থেকে তাঁদের জীবনযাত্রা, সংগ্রাম দেখেছি; যা আমাকে এই সিনেমা বানাতে উৎসাহ দিয়েছে। আর তৃণমূল, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে আমাদের মেইনস্ট্রিম সিনেমায় তো তেমন কাজ করা হয় না। বলা যায়, একটা দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই “নীলপদ্ম” বানাতে চেয়েছি।’
দেশের বাইরের উৎসবে প্রদর্শিত হলেও বাংলাদেশ এটিই ‘নীলপদ্ম’র প্রিমিয়ার। ‘যৌনকর্মী হওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিল না, কিন্তু পরিবেশ–পরিস্থিতির চাপে পড়ে এই পেশায় আসতে বাধ্য হয়েছেন, এমন অনেক নারীই আছেন। তিনি যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান; বিয়ে, স্বামী, সন্তান চান; যদি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চান; পারেন না। যৌনকর্মীদের কোনো সামাজিক স্বীকৃতিও নেই। সিনেমায় এই ব্যারিয়ারই ভাঙতে চেয়েছি, এই প্রশ্নই রাখতে চেয়েছি,’ বলছিলেন নির্মাতা তৌফিক এলাহী। যৌনকর্মীদের জীবনসংগ্রাম ও সামাজিক অবস্থান নিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন ‘নীলপদ্ম’।