পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরযমুনা সংলগ্ন মাঝেরচরের সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে বনভূমি দখল করে মাছের ঘেরের আয়তন বাড়ানো নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রমাণ লোপাট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বনখেকো চক্রটি।
তবুও এ ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এসে অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান। ইতিমধ্যে গাছ কাটার অপরাধে অভিযুক্ত ঘের মালিক জুয়েল সিকদারকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছে বন বিভাগ।
এর আগে গত ৭ মার্চ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ‘সংরক্ষিত বনে বনখেকো চক্রের থাবা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি নজরে আসে বন বিভাগের। তাৎক্ষণিক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পটুয়াখালী সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে এ তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বন বিভাগের রাঙ্গাবালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিতাভ বসু ও চরমোন্তাজ রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান।
গঠিত এই তদন্ত কমিটি রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন উপকূলীয় বন বিভাগের পটুয়াখালীর সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম।
পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ে আমি ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমরা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে এবিষয়ের প্রতিবেদন দাখিল করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিদর্শনে দেখলাম— তারা কিছু অনিয়ম করেছে। কিছু গাছ কাটার আলামত পেয়েছি। কিছু জায়গা সম্প্রসারণ করে ঘের বড় করেছে। ইতোমধ্যেই আদালতে এ বিষয়ে মামলা করা হয়েছে। বন রক্ষায় আমাদের টহল অব্যাহত আছে, ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আগামী দুইদিনের মধ্যে বনের ভেতরের বাঁধ অপসারণের নির্দেশ দিয়েছি।
এলাকার একাধিক লোক জানান, গাছ কাটার আলামত হিসেবে থাকা অবশিষ্ট গোঁড়া লুকাতে ঘেরের মধ্যে পানি প্রবেশ করিয়েছেন। কাটা গাছের টুকরো গায়েব করেছেন। যাতে তদন্ত কমিটি এসে গাছ কাটার কোন ধরণের আলামত না পায়। কিন্তু জুয়েল এতে ব্যর্থ হয়েছেন। তদন্ত কমিটির সামনে এখন সবকিছু পরিষ্কার। চরযমুনা গ্রামের বাসিন্দা মামুন মাঝি জানান, গাছ কাটা হয়েছে। বনের মধ্যে ঘেরের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এসবকিছু দেখে গেছে তদন্ত কমিটি।
উপকূলীয় বন বিভাগের পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে গাছ কেটে ভূমি দখলের সংবাদ ভাইরাল হওয়ার পর আমরা অধিকতর তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তদন্ত কমিটির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলা বিচারাধীন।’