শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সব জায়গা থেকে যেমন তাদের নাম মুছে দেওয়ার প্রয়াস চলছে তেমনি সুযোগ পেলেই তাদের ভৎসর্না দেওয়া হাতছাড়া করা হচ্ছে না। হোক সেটা টিএসসিতে ব্যানারে জুতা নিক্ষেপ কিংবা শেখ হাসিনার ঘৃণাস্তম্ভ। সেই ঘটনায় এবার নতুন সংযোজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তৈরি এবারের অমর একুশে বইমেলায় শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে ডাস্টবিনে স্থাপন। ডাস্টবিনে লাগানো হয়েছে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ‘ঘৃণা স্তম্ভে’র ছবি।
শনিবার বইমেলার প্রথম দিনে এ ডাস্টবিনে ময়লা ফেলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সেটির কয়েকটি ছবি নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘শনিবার বাংলা একাডেমিতে একুশে বইমেলার প্রথম দিনে ডাস্টবিনে জঞ্জাল নিক্ষেপ।’
এদিকে প্রেস সচিবের এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী ও হুমায়ূন আহমেদ স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মেহের আফরোজ শাওন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বইমেলার ওই পোস্টটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ভাগ্যিস…এই বইমেলা দেখার জন্য হুমায়ূন আহমেদ নেই।’
শাওন তার ফেসবুক পোস্ট লিখেছেন, ‘আজ পহেলা ফেব্রুয়ারি, অমর একুশে বইমেলার প্রথম দিন। দায়িত্বশীল পদে থাকা ছবির এই ভদ্রলোকটি দিতে পারতেন চমৎকার কিছু কথা সহ বইমেলা উদ্বোধনের ছবি। মেলার প্রথম দিনে কোন বই কিনলেন কিংবা কোন কোন বই কেনার আগ্রহ রাখেন সেটাও সবাইকে জানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি ফেসবুকে নিজ দেয়ালে নিচের ছবি দিয়ে উনার ডাস্টবিন মার্কা রুচির পরিচয় দিয়ে দিলেন। হায়… তবে কি বাংলাদেশ ২.০ এর ক্ষমতাবানেরাও ভাবছেন যে তারা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে আছেন! ভাগ্যিস… এই বইমেলা দেখার জন্য হুমায়ূন আহমেদ নেই…।’
যদিও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশকারী শাওনই প্রথম ব্যক্তি নন। মেলা উদ্বোধনের প্রথমদিনে শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত ডাস্টবিনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরার পর এ বিষয়ে লেখক শোয়াইব জিবরান বলেছেন, বইমেলা শিক্ষিত মানুষদের স্থান। শিক্ষার পরিচয় পরিশীলিত আচরণে। রাজনৈতিক অশ্লীলতা বইমেলা পর্যন্ত টেনে আনা ঠিক হয়নি। ডাস্টবিনটি অপসারণ করা হোক।
অলঙ্করণশিল্পী চারু পিন্টু লিখেছেন, এমন বইমেলা দেখতে চাই না। এমন বইমেলায় যেতেও চাই না।
উল্লেখ্য, শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তার সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গনে এসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্টল পরিদর্শনের সময় তাকে শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ডাস্টবিনে টিস্যু পেপার ফেলতে দেখা যায়। পরে তিনি এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করার পর তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা।