মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি এখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। আমরা জানি না শিশুটির ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ভুক্তভোগী ওই শিশুটির জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া চাই, যেন সুস্থ হয়ে নিষ্পাপ এ শিশুটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। ধর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে, চারজন গ্রেফতারও হয়েছে।
আমরা খবরের কাগজে যখন চোখ রাখি তখন দেখি ধর্ষণের কোনো না কোনো খবর আছেই। ধর্ষণ বা নারী নির্যাতনের খবর ছাড়া যেন পত্রিকা ছাপা হয় না। অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে দৃষ্টি দিলে একই অবস্থা দেখতে পাই। ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হলে আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু দেশে ইতোপূর্বে অনেক ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ওই সব ঘটনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন হয়েছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে পুরো দেশবাসী। কিন্তু ধর্ষকের অনেকেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি।
আমাদের জন্য লজ্জা-ঘৃনার বিষয় হচ্ছে, দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি অনুষ্ঠান পালিত হয়, চিহ্নিত ওই ধর্ষকদের বিচারের উদ্যোগই নেয়া হয়নি। সিলেটের এমসি কলেজের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কী শাস্তি হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। একজন নাগরিক তার স্ত্রীকে এমসি কলেজ ক্যাম্পাস দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নেতারা সেই দম্পতির ওপর হিংস্র দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বামীকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বন্দি করে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে নরপিশাচরা। আমরা কুমিল্লার তনুর রক্তাক্ত অর্ধউলঙ্গ দেহ দেখতে পেয়েছি, কিন্তু তনুর ওপর নির্মম নির্যাতনকারীদের চিনতে পারিনি।
বাসে তরুণীকে রাতভর ধর্ষণ করা হয়। মাইক্রোবাসে ধর্ষণ করা হয়। টেলিভিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ধর্ষণের শিকার ডাক্তার নারী পেগন্যান্সির খবর জানাতে সংবাদ সম্মেলন করতে হয়। এই সব ঘটনাগুলো আমাদের চোখে ভাসছে। কিন্তু কোনো ভুক্তভোগী কি সঠিক বিচার পাচ্ছেন? বিচার না পাওয়ার সংস্কৃতির কারণেই এমন নির্মম অপরাধ বারবার ঘটছে। আমরা আসলে আমাদের শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। আমরা চাই প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। যে শাস্তি দেখার কারণে অন্যরা এমন অপরাধ করার সাহস পাবে না।