ধর্ষণ ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে শাবিপ্রবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল

New-Project-30-1.jpg

ধর্ষণ ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে শাবিপ্রবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিবাদে এবং ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ১০ মার্চ, সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শাহপরান হল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করেন।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলোর উল্লেখ করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বন্দীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়া, শিশু আছিয়াকে ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদন্ডের দাবি জানান।

বিক্ষোভ শেষে আলোচনায় বক্তারা দেশের নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুপ্রবেশকে দায়ী করেন। তারা অভিযোগ করেন, শাহবাগের কিছু গোষ্ঠী আলেম সমাজের বয়ানকে নারীবিদ্বেষী হিসেবে উপস্থাপন করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা উল্লেখ করেন, আলেম সমাজ সর্বদা ইসলামী মূল্যবোধ প্রচার করে সমাজে নৈতিকতা রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। উলামায়ে কেরাম আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী পুরুষদের নজর হেফাজত করা এবং নারীদের পর্দা পালনের কথা বলেন। যে নৈতিকতার কাঠামো ভেংগে দিতে শাহবাগিরা উঠে পড়ে লেগেছে। তারা আরো বলেন, তারা আলেমদের বিদ্বেষী হিসেবে উপস্থাপন করে অথচ এদেশের নৈতিকতার অবক্ষয় তো তখন শুরু হয়েছে যখন এদেশের মিডিয়া গুলো নয়িকাদের অশ্লীল ছবি ছেপে তাদের একের পর এক স্বামী পরিবর্তনের ঘটনা ফলাও করে প্রচার করেছে। ধর্ষন ইস্যুতে শাহবাগীরা তাদের অথর্বতার প্রমান আরো একবার প্রদান করেছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সরকার সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে সমাজে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে, যা নিন্দনীয়। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার এই অবস্থা বজায় রাখলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ:

  • ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
  • একজন পুরুষকে ‘অদম্য নারী’ পুরস্কার প্রদান করে নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে—এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
  • রাসূল (সা.)-এর প্রতি অবমাননার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং এ সংক্রান্ত কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
  • সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সামাজিক নীতি নির্ধারণ করতে হবে।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ধর্ষণ ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার জন্য সকলের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, এই আন্দোলন শুধু একটি ঘটনার প্রতিবাদ নয়, এটি ন্যায়বিচার ও নৈতিকতার জন্য একটি চলমান লড়াই। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

Leave a Reply

scroll to top