“দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা” কর্মসূচিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একযোগে সংহতি প্রকাশ

New-Project-14-1.jpg

"দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা" কর্মসূচিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একযোগে সংহতি প্রকাশ

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতায় ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হায়েনাদের বর্বর হামলার প্রতিবাদে একযোগে “দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা” কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার, ৭ এপ্রিল ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারাণ শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরাইলী আগ্রাসনের প্রতিবাদে আজ ৭ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী পালন করা “দ্যা ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা” কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে ঢাবির শিক্ষার্থীরা।

ইংরেজিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বিবেক ও প্রত্যয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গাজার নিপীড়িত জনগণের সাথে আমাদের গভীর সংহতি প্রকাশ করছি। ঐতিহাসিকভাবে ন্যায়বিচার ও প্রতিরোধের সম্মুখভাগে দাঁড়িয়েছে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে, আমরা আর এই গণহত্যার মুখে নীরব থাকতে পারি না। যদিও বিশ্বের ক্ষমতাধররা জড়িত বা উদাসীন, গাজার জনগণকে পরিকল্পিতভাবে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে, তাদেরকে অনাহারে রাখা হচ্ছে এবং তাদের জন্মভূমি থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে। হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির সবই নিরবচ্ছিন্ন সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে, নিরপেক্ষতা, নীরবতা কোন বিকল্প নয়, নীরবতা বিশ্বাসঘাতকতা।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, গাজাবাসীদের উপর চলমান দমন-পীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে তারা আগামীকাল ৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ‘Global Strike for Gaza’-তে অংশগ্রহণ করবেন।

এক জরুরি নোটিশে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গাজায় চলমান অবর্ণনীয় নিপীড়ন ও মানবিক সংকটে নিপতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো তাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই আন্তর্জাতিক ধর্মঘটের অংশ হিসেবে নোবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস, ল্যাব ও পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে— “আমরা, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, গাজার জনগণের সঙ্গে নিঃশর্ত সংহতি প্রকাশ করছি। দমন, দখলদারিত্ব ও সামষ্টিক অবিচারের বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রতিবাদ। আমরা কোনো ক্লাস, ল্যাব বা পরীক্ষায় অংশ নেব না। এই আন্দোলন কেবল একটি আঞ্চলিক ইস্যু নয়—এটি মানবাধিকারের, ন্যায়বিচারের, ও মর্যাদার প্রশ্ন। নীরবতা এখানে অপরাধের সমান। শিক্ষার্থীদের মতে, এই শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটের মাধ্যমে তারা এক বৃহৎ নৈতিক অবস্থান গ্রহণ করছেন—মানবাধিকারের পক্ষে এবং নির্যাতিতদের পাশে।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনি মুসলিমদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যার প্রতিবাদে “বিশ্বব্যপী দ্যা ওয়ার্ল্ড স্টপ ফর গাজা” কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে সকল প্রকার ক্লাস, পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিবৃতি দিয়েছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল পেইজ থেকেও ফিলিস্তিনে মুসলিমদের হত্যার প্রতিবাদ এবং শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল পেইজে বলা হয়েছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত বর্বর আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ এবং গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সিনেটে ভবনের সামনে বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অফিসার-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (SUST), সিলেট-এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি সরকারের চলমান গণহত্যার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এই পরিকল্পিত সহিংসতার ফলে নবজাতক, শিশু, কিশোর এবং বয়স্ক সহ অসংখ্য নিরীহ মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে, যাদের অনেকেই গুরুতর আহত এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবার অভাব রয়েছে। SUST-এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রভাবশালী মুসলিম দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির নিষ্ক্রিয়তার তীব্র নিন্দা জানায়, যারা মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং এই নৃশংসতা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

 

SUST-এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা গাজায় চলমান, ভয়াবহ গণহত্যা এবং গুরুতর মানবাধিকার সহিংসতা সম্পর্কে তীব্রভাবে অবগত। আমরা বিশ্বব্যাপী শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির উদাসীনতার তীব্র নিন্দা জানাই। ৭ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে পালিত হতে যাওয়া “দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা” বিশ্বব্যাপী উদ্যোগের সাথে সংহতি প্রকাশ করে, SUST-এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেদিন ক্লাস, পরীক্ষা এবং অফিসের কাজ সহ সকল একাডেমিক এবং অফিস কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসন ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ এবং গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে—  আজ ৭ এপ্রিল (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংহতি প্রকাশ করে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বিরতি ভঙ্গ করে নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রতিবাদে আজ সোমবার বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের ডাকে সাড়া দিয়ে একদিনের সম্পূর্ণ শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৬ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

 

শিক্ষার্থীরা বলেন,প্রতিদিন নিরপরাধ পুরুষ, নারী, শিশু এমনকি নবজাতকদেরও প্রতিনিয়তো হত্যা করে যাচ্ছে ইজরায়েলি বাহিনীরা, এটি যুদ্ধ নয় বরং এটি একটি পরিকল্পিত জাতিগত নির্মূল অভিযান। এটি কোনো মানবাধিকারের রক্ষকরা নীরব থাকে, তখন আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাপুরুষোচিত এই নীরবতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।

 

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরা গাজার পাশে আছি গাজার নিপীড়িত জনগণের প্রতি অটুট সংহতি প্রকাশ করে আমরা ধর্মঘট পালনের মাধ্যমে বৈশ্বিক আহ্বানে সাড়া দেব। এদিন শিক্ষার্থী সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে জানান তারা সেই সাথে কোনো ক্লাস, ল্যাব বা অফিস কার্যক্রম ও চলবে না।শিক্ষার্থীরা চায় , ঐক্যের আওয়াজ ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ুক। নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই।”

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েল কর্তৃক চলমান বর্বর গণহত্যা, দখলদারিত্ব ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আনুষ্ঠানিকভাবে সংহতি জানিয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন।

এ উপলক্ষে আজ সোমবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করেছে প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

রোববার (৬ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন আর রশিদের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত বর্বর আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে এ হামলা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এছাড়াও, গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আন্তর্জাতিক কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামীকাল সোমবারের (৭ এপ্রিল) সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। সমাবেশে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে, সংহতি সমাবেশের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আগামীকাল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, “ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে আমরা স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছি। মানবাধিকার, শান্তি ও ন্যায়বিচারের প্রতি আমাদের অটল অঙ্গীকার থেকে আমরা ৭ এপ্রিল সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আজ বিশ্বব্যাপী পালিত হবে “দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা” কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল পেইজে ইংরেজিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়—“আমরা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, গাজার নিপীড়িত জনগণের সঙ্গে আমাদের গভীর সংহতি প্রকাশ করছি। আমরা “গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা”-তে অংশ নিচ্ছি নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়াতে, ক্ষমতার মুখোমুখি হয়ে সত্য বলার জন্য এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানাতে। ৭ই এপ্রিল আমরা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সকল ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাব বর্জন করব।

Leave a Reply

scroll to top