জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক কক্ষে অবস্থানরত ‘হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের’ নকল আইডিকার্ডধারী এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করেছে প্রক্টরিয়াল টিম।
বুধবার (৫ মার্চ) দিবাগত রাত দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল হলে এ ঘটনা ঘটে।
আটক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নকল পরিচয়ধারী ভুয়া শিক্ষার্থী হলেন সিরাজগঞ্জের মিরপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু হুরাইরা (২২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাতে হলের ২১৩ নম্বর কক্ষে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা তার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রক্টোরিয়াল টিমকে খবর দেন। প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কাছ থেকে একটি নকল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড উদ্ধার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে হুরাইরা স্বীকার করেন, তিনি নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিভিন্নজন, এমনকি তার পরিবারের সদস্যদেরও বিভ্রান্ত করেছেন।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র মজার ছলে এটি বানিয়েছি, অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। আমি রাতটা কাটানোর জন্য জাবিতে এসেছিলাম, কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।’
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও স্বীকার করেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় তিনি এর আগেও ৭-৮ দিন হলে অবস্থান করেছিলেন, তখন তিনি এক শিক্ষার্থীর আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. রিফাদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘তার পরিচয় সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তিনি ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে এর আগেও ২১২ নম্বর কক্ষে থেকেছেন এবং আজও থাকার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। আমরা তাকে ২১৩ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে হল প্রশাসনকে জানাই। পরে প্রশাসন এসে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের জানায় হলে একজন বহিরাগত অবস্থান করছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দ্রুত সেখানে যাই এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন এবং আমরা তার কাছ থেকে একটি নকল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড উদ্ধার করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমরা তার স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে লিখিত বক্তব্য নেওয়ার পর আমরা তাকে তার পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছি।’