চার দিনের সফরে আগামী ১৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তর আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আনুষ্ঠানিক বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ মহাসচিব এ সফরে আসছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকার ইস্যুবিষয়ক বিশেষ দূত ড. খলিলুর রহমান গত ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ড. ইউনূসের পাঠানো আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
এর আগে একই কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি (রোববার) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফর এবং কক্সবাজারের শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
রোববার বৈঠককালে রোহিঙ্গা সংকট, এর সমাধানের নতুন উপায় অনুসন্ধান এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শিবিরে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার জন্য নতুন দাতাদের সম্পৃক্ত করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা ও জুলি।
এ সময় ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ চলতি বছরের শেষের দিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে। তিনি এ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী জুলি বিশপকে এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মুখ্য ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির নতুন দিকনির্দেশনার প্রেক্ষিতে অনিশ্চয়তার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও দাতা সংগ্রহের বিষয়েও আলোচনা করা হয়। বিশপ রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ব্যাপভাবে সফল করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ সম্মেলনটি দশকব্যাপী সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
এদিকে মার্কিন মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, জাতিসংঘ এই বছরের শেষের দিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে এবং তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপকে এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘আপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে’ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা জুলি বিশপকে বলেন, মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড সম্মেলনের সহ-সহায়ক হতে সম্মত হয়েছে।
গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংকট নিরসনে এবং পশ্চিম মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নতুন শরণার্থীদের আগমন রোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূতের সহায়তাও কামনা করেছেন অধ্যাপক ইউনূস।