দ্রুত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের আয়োজন ও কার্যকর করার দাবিতে প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ২টায় উপাচার্য কার্যালয় ও প্রক্টর অফিসে শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, চবি এদেশের একটি স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে গভীর উদ্বেগের বিষয় এই যে, দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে চাকসু কার্যকর ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এটি ছাত্রসমাজের অধিকার ও গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে এক গুরুতর অন্তরায়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও অধিকার চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। চাকসুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি-দাওয়া ও সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট উপস্থাপন করতে পারে। পাশাপাশি এটি নেতৃত্ব বিকাশের একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম, যা শিক্ষার্থীদের চিন্তা-চেতনা, মেধা ও সৃজনশীলতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আমরা বিশ্বাস করি, চাকসু শুধু একটি নির্বাচিত ছাত্র সংসদই নয়; বরং এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে একটি সেতুবন্ধন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ১৯৯০ সালের পর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব বিকাশ, প্রশাসনের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ এবং ন্যায্য দাবির প্রাতিষ্ঠানিক উপস্থাপন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা মনে করি, বর্তমান সময়ে চাকসু নির্বাচনের আয়োজন অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নয়। বরং একটি সুস্থ, গণতান্ত্রিক ও নৈতিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতেও অপরিহার্য।
স্মারকলিপিতে শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকসু নির্বাচন আয়োজনের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ও সময়সূচি ঘোষণা করতে হবে। চাকসুর জন্য গঠনতন্ত্র শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হালনাগাদ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে একটি স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রসংসদ পুনরায় কার্যকর করে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের অন্যতম প্লাটফর্ম চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে চবি শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। সর্বশেষ নব্বইয়ের পর এ পর্যন্ত নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য দ্রুত চাকসু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।”