চবি ছাত্রের উপর হামলার ঘটনায় মূল গেইটে তালা

প্রশাসনের আশ্বাসে ফটক খুলে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

New-Project-23-2.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীর উপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেইটে তালা দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকটি তালাবদ্ধ ছিল। এতে ফটকের পাশে সরু গলি দিয়ে যাতায়াত করতে পারলেও যানবাহনের চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে সকাল ১১ টা ৪০ মিনিটে তালাবদ্ধ মূল ফটক খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, সোমবার (১৪ এপ্রিল)। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং এলাকায় এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর মধ্যরাতে প্রধান ফটকে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুলতানুল আরেফিন বলেন, আমি গতকাল (সোমবার) রাত সাড়ে ১০টায় নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষে বাইক নিয়ে যাওয়ার পথে রেলক্রসিং এলাকায় এক সিএনজি চালক আমার পায়ে তার গাড়ি তুলে দেয়। এতে উভয়ের মাঝে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেলও পরে কিছু স্থানীয়রা আমার বাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো দেখতে পেয়ে আমাকে মারধর করে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরদের ফোন করলেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর রাত ২টায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. কামাল উদ্দিন স্যারকে ফোনে আমাদের বলেছিল সকাল ৮টায় তিনি এখানে আসবেন। কিন্তু তিনি আসেননি।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, গতকালের নিন্দনীয় হামলার ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেইটে তালা দিয়েছিলাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে কিছুক্ষণ আগে গেইট খুলে দিয়েছি।

তিনি বলেন, প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ছিল- শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১ নম্বর গেইট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত চক্রাকার বাস চালু করা এবং সিএনজি চালকদের দৌরাত্ম কমানো।

হামলার ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। গতকালের ঘটনায় প্রক্টরদের ফোন করলেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাসের সিএনজি চালকদের দৌরাত্ম নতুন কিছু নয়। কিন্তু এগুলোর কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। এসব কারণে গতকাল রাত থেকে আমরা মূল গেইটে তালা দিয়েছি। 

চবি সিএনজি স্টেশনের লাইন সেক্রেটারি মো. সেকান্দার বলেন, ঘটনাটি আমি সকালে জানতে পেরেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ওই চালকের ছবি দেখেছি। তিনি আমাদের সমিতির সদস্য নন, বহিরাগত। সমিতির সদস্য হলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, আমরা গতকাল আমাদের এক শিক্ষার্থীর উপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এটি খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে মূল ফটক বন্ধ থাকলে সবার মাঝে একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হবে। আমরা সর্বদা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ও নিরাপত্তায় আছি।

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা গতকাল আমাদের এক শিক্ষার্থীর উপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এটি খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে বিষয়টি সমাধান কথা বলেছি। বর্তমানে মূল ফটক তারা খুলে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমাদেরই দাবি। আমরা দাবিগুলো অবশ্যই বাস্তবায়ন করব। পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীর উপর হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। আগামী সমাবর্তনের আগে আপাতত অল্প পরিসরে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করার হবে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

scroll to top