যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও ইসরায়েলি বাহিনী অবশ্য গাজা উপত্যকা জুড়ে তাদের হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং চুক্তির কথা ঘোষণার পর থেকে এই ভূখণ্ডে অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা ১৫ মাস ধরে চলা নৃশংসতার পর কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতির কথা জানা গেছে। যুদ্ধক্লান্ত গাজাবাসী এ খবরে উল্লাসে মেতেছেন। তবে বন্ধ হয়নি ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা। গাজার খান ইউনিস এলাকা ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।ইসরায়েল ও হামাস—বিবদমান দুই পক্ষ গতকাল যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছায় বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেছেন। এই চুক্তির আওতায় গাজায় সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি উপত্যকাটিতে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তির পথও খুলবে।
গাজার আল-আকসা হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে আল-জাজিরার সংবাদদাতা জানান,যুদ্ধবিরতির খবর শোনার পর সেখানকার পরিস্থিতি বদলে যায়। মানুষ উল্লাসে মেতে ওঠেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে পুরো এলাকায় উদ্যাপন চলে। এই দৃশ্যপট সেখানে নিকট অতীতে দেখা যায়নি। কেননা, যুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন এবং আহত ব্যক্তিদের যন্ত্রণা আর বিষণ্নতায় এত দিন ভরে ছিল এলাকাটি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। এছাড়া গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গত বছরের নভেম্বরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত