নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায় অবস্থিত একটি অন্যতম আবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। নোয়াখালী জেলার সোনাপুরে ১০১ একর জায়গার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। এটি বাংলাদেশের ২৭ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে ২০০৬ সাল থেকে।
২০০১ সালের ১৫ জুলাই জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে ৪টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এটি ৩১টি বিভাগ,৬টি ফ্যাকাল্টি ও ২টি ইনস্টিটিউট নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।যেখানে বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা প্রশাসন, সামাজিক বিজ্ঞান, এবং মানবিক বিষয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়।বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে এবং এর জন্য একটি গ্রিন হাউজ রিসার্চ সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
নোবিপ্রবি নোয়াখালী জেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে সোনাপুর-সুবর্ণচর সড়কের পশ্চিম পাশে ১০১ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রয়েছে ৫ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, একাধিক একাডেমিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, অডিটোরিয়াম, এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ৫টি আবাসিক হল। এছাড়া, ক্যাম্পাসে একটি কাশফুল বন,সুদৃশ জলাধার ও ময়না দ্বীপ নামে একটি দ্বীপ রয়েছে,যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।এছাড়াও কেন্দ্রীয় মসজিদ,মন্দির, শান্তিনিকেতন,প্রশান্তি পার্ক ইত্যাদি স্থান রয়েছে,যেখানে শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় নিয়মাবলি পালন করে এবং আড্ডাসহ বিভিন্নরকম কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে।এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে উপকূলীয় বিশ্ববিদ্যালয় (Coastal University) ও বলা হয়।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর আধুনিক অবকাঠামো, বৈচিত্র্যময় একাডেমিক প্রোগ্রাম, এবং গবেষণামূলক কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করছে।
২০১১ সাল থেকে এখানে মাস্টার্স কোর্স চালু হয়।নোবিপ্রবির ইনস্টিটিউট দুটি হলো: (১)ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন সায়েন্স(আইআইএস),(২)ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি(আইআইটি)।
নোবিপ্রবির ফ্যাকাল্টি ছয়টি হলো:(১)ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি,(২) ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স,(৩)ফ্যাকাল্টি অব সোশ্যাল সায়েন্স এন্ড হিউমানিটিস,(৪)ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন,(৫)ফ্যাকাল্টি অব এডুকেশন সায়েন্স ও (৬)ফ্যাকাল্টি অব ল।
নোবিপ্রবির বিভাগগুলো হলো:(১)কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং(সিএসটিই),(২)এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই),(৩)ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং(আইসিই),(৪)ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং(ইইই),(৫)ফিশারিচ এন্ড মেরিন সায়েন্স(এফআইএমএস),(৬)ফার্মেসী,(৭)মাইক্রোবায়োলজি,(৮)এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস,(৯)স্টেটিস্টিক(১০)ফুড টেকনোলজি এন্ড নিউট্রিশন সায়েন্স(এফটিএনএস),(১১)এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট(ইএসডিএম),(১২)বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং(বিজিই),(১৩)এগ্রিকালচার,(১৪)ওশিয়ানোগ্রাফি(১৫)বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি(বিএমবি),(১৬)জোলজি,(১৭)সয়েল,ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট,(১৮)কেমিস্ট্রি,(১৯)ফিজিক্স,(২০)বাংলাদেশ এন্ড মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ(বিএমএস),(২১)সোশিয়লজি,(২২)ইংলিশ,(২৩) বাংলা,(২৪)ইকোনমিকস,(২৫)সোশ্যাল ওয়ার্ক,(২৬)বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন,(২৭)ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট(টিএইচএম),(২৮)ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম(এমআইএস),(২৯)এডুকেশন,(৩০)এডুকেশনাল এডমিনিস্ট্রেশন ও (৩১)আইন ইত্যাদি।
নোবিপ্রবিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৬৩০০ জন,শিক্ষক সংখ্যা ৩০০ এর অধিক,অফিসার সংখ্যা ১২০ এর অধিক এবং স্টাফ রয়েছে প্রায় ২৪৫ জন।