চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যাপক সংখ্যক অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অন্তত ১,০৮০ জন ভারতীয় নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের অধিকাংশই ছিলেন অবৈধভাবে অবস্থানকারী। ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের প্রায় ৬২ শতাংশই বাণিজ্যিক ফ্লাইটের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী বা অবস্থানকারী ভারতীয় নাগরিকদের ফেরত আনার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বিদ্যমান। যেসব ভারতীয়কে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়, তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জয়সওয়াল আরও বলেন, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ভারত নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে এবং এই প্রক্রিয়াটি ‘দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে’ পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থী ভিসার ওপর নতুন কঠোরতা: ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ
একই সংবাদ সম্মেলনে রণধীর জয়সওয়াল যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চলমান টানাপোড়েন নিয়েও কথা বলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে নতুন ভিসা নীতির প্রেক্ষাপটে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বব্যাপী মার্কিন দূতাবাসগুলোকে নতুন শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ ভিসার ইন্টারভিউ আপাতত স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশে বলা হয়েছে, ভিসা আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলসহ অতিরিক্ত তথ্য যাচাইয়ের ওপর জোর দেওয়া হবে এবং নতুন ইন্টারভিউ গ্রহণ আপাতত বন্ধ থাকবে।
জয়সওয়াল বলেন, “বিদেশে অবস্থানকারী ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণের বিষয়টি সর্বদা আমাদের অগ্রাধিকারে থাকবে। আমরা আশা করি, মার্কিন কর্তৃপক্ষ ভিসার আবেদন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেবে এবং ভারতীয় শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে তাদের একাডেমিক প্রোগ্রামে যোগ দিতে পারবে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে এ ধরনের কঠোরতা আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি বৈধ ভিসা আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি বৃদ্ধি পাওয়া একটি স্পষ্ট বার্তা।
এই নতুন নীতির ফলে যেসব ভারতীয় শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠতে পারে।