ঈদুল আজহা সামনে রেখে শুরু হলো বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি

New-Project-12-6.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার (১৬ মে) থেকে শুরু হয়েছে দূরপাল্লার বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। যাত্রীদের ঈদযাত্রা সহজ ও সুশৃঙ্খল করতে বাস মালিকদের সংগঠন বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

এদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন টার্মিনালে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা কাঙ্ক্ষিত তারিখের টিকিট সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ থেকে শুরু হওয়া এই বিক্রিতে ২৯ মে ও পরবর্তী দিনের টিকিট পাওয়া যাবে।

এর আগে গত ১৪ মে বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানান, যাত্রীরা ১৬ মে থেকে টিকিট কিনতে পারবেন সরাসরি কাউন্টার ও অনলাইন—দুই মাধ্যমেই। তবে কিছু পরিবহন সংস্থা কেবল অনলাইনেই টিকিট দেবে।

তিনি আরও জানান, “বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার তালিকাই অনুসরণ করতে হবে। কোনোভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে মালিকদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

সরেজমিনে বিভিন্ন কাউন্টারে দেখা গেছে, অনেক যাত্রী আগের রাত থেকেই লাইনে অপেক্ষা করছেন। আবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে জানিয়েছেন, অনলাইনে চাহিদা বেশি থাকায় নির্দিষ্ট তারিখের টিকিট সংগ্রহে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।

অপরদিকে, বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে যাত্রীসেবার মান বজায় রাখা ও ভাড়া সংক্রান্ত অভিযোগ প্রতিরোধে নজরদারি বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে।

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা যেন সহজ, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ হয়—এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকার গ্রহণ করেছে নানামুখী পদক্ষেপ। সড়ক, রেল, নৌ ও বিমানপথ—সবখানেই বাড়ানো হয়েছে নজরদারি ও পরিচালন ব্যবস্থাপনা।

সড়কপথে বিশেষ ব্যবস্থা

বাস টার্মিনালে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে, যা যাত্রীসেবার মান ও শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণ করবে।

বিআরটিএ ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে বাসভাড়া, ফিটনেস ও লাইসেন্স যাচাইয়ে ভ্রাম্যমাণ অভিযান চালাবে।

দুরপাল্লার বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা জোরদারে হাইওয়েতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে, যাতে চুরি, ডাকাতি বা হয়রানির ঘটনা রোধ করা যায়।

 রেলপথে ট্রেনের সংখ্যা ও কোচ বাড়ানো

ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করা হচ্ছে ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুরসহ কয়েকটি রুটে।

পুরনো কোচ সংস্কার করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে যুক্ত করা হচ্ছে।

অনলাইনে টিকিট বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি ও সার্ভার সুরক্ষায় অতিরিক্ত প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

 নৌপথে নিরাপত্তা ও নিয়মিত মনিটরিং

ঘাট এলাকাগুলোতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়।

বিআইডব্লিউটিএ ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে নৌযানগুলোর নিরাপত্তা ও ধারণক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করছে।

অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌযান চলাচলে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হয়েছে।

বিমানপথে যাত্রীসেবা ও ফ্লাইট সমন্বয়

বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে অতিরিক্ত কাউন্টার ও কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।

ফ্লাইট শিডিউল নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য বিমান সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি সেবা প্রস্তুত

র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও ফেরিঘাটে মোতায়েন থাকবে।

জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য হটলাইন নম্বর ও তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।

 

 

Leave a Reply

scroll to top