এই বাবা দিবসে— ভ্রমণ হোক ভালোবাসার ভাষা

New-Project-36-1.jpg

বাবা দিবসে বাবার জন্য ভ্রমণের উপহার

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

প্রতিটি বাবারই জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত থাকা উচিত যা শুধু তাঁর জন্য। যিনি সারাজীবন পরিবারের জন্য কাজ করে গেছেন, তাঁর কাঁধে যে দায়িত্ব ছিল আমাদের মানুষ করে তোলার, তাঁকে একদিন একটু আলাদা করে সম্মান জানানোই তো উচিত। তাই এবারের বাবা দিবস (১৫ জুন, ২০২৫) হোক একটু অন্যরকম। আর সেই অন্যরকমটা হোক একটি ছোট ভ্রমণের মাধ্যমে, যেখানে বাবার সঙ্গে কাটবে নিরবিচারে কিছু মুহূর্ত—যা অনেকদিন স্মৃতিতে থাকবে।

বাংলাদেশের ভেতরেই এমন অনেক স্থান আছে, যেখানে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে বাবাকে উপহার দেওয়া যায় নিখাঁদ প্রশান্তি ও আনন্দ। চলুন দেখে নেওয়া যাক এমন ৭টি গন্তব্য, যা বাবার রুচি, পছন্দ এবং স্বভাব অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়।

১. ভাটিয়ারি, চট্টগ্রাম: প্রকৃতির কোলে প্রশান্তি খোঁজার গন্তব্য

যদি আপনার বাবা প্রকৃতি ভালোবাসেন, তাহলে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারি হতে পারে একদম সেরা জায়গা। পাহাড়ঘেরা এই জায়গা সেনাবাহিনীর অধীনে বিধায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ। ভাটিয়ারি হ্রদের ধারে হেঁটে বেড়ানো কিংবা পাহাড়ি সড়ক ধরে ছোট একটা ড্রাইভ—সব মিলিয়ে এখানে কাটানো সময় হয়ে উঠবে মনে রাখার মতো।

২. কক্সবাজার: সমুদ্রের ধারে বাবার মুখে হাসি

যেকোনো বয়সেই কক্সবাজার তারুণ্য এনে দেয় মনে। বাবার দীর্ঘ কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি কাটাতে কক্সবাজারের সৈকত হতে পারে এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। হিমছড়ি বা ইনানীর মতো তুলনামূলক নিরিবিলি সৈকতে এক বিকেল কাটানো কিংবা সামুদ্রিক খাবারের স্বাদ নেওয়া—সবই যেন একটি পারফেক্ট রিল্যাক্সেশন প্যাকেজ।

৩. তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়: কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা ও চা বাগানের প্রশান্তি

যারা শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করেন, তাদের জন্য তেঁতুলিয়া এক আদর্শ জায়গা। এখানকার চা বাগানগুলোতে বসে এক কাপ চা খেতে খেতে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়, যা একজন বাবার জন্য হতে পারে অসাধারণ অভিজ্ঞতা। বর্ষাকালে কিংবা শীতের শুরুতে এই এলাকা হয়ে ওঠে আরও মোহনীয়।

৪. সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ: ইতিহাসপ্রেমী বাবার জন্য

আপনার বাবা যদি ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী হন, তাহলে সোনারগাঁওয়ের পানাম নগর, লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, এবং মেঘনার তীরের পটভূমি হতে পারে তাঁর জন্য নিখুঁত একটি একদিনের ভ্রমণ। অল্প খরচে ঢাকার কাছাকাছি এক ঐতিহ্যবাহী দিন কাটানোর এটি চমৎকার সুযোগ।

৫. রাজশাহী: আমের রাজ্য ও পদ্মার ধারে সন্ধ্যা

রাজশাহী মানেই আমের দেশ। গ্রীষ্মকালে সেখানে গিয়ে আম খাওয়া, পদ্মার পাড়ে বসে সময় কাটানো বা বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর দেখা—এসবই বাবার সঙ্গে মানসম্পন্ন সময় কাটানোর সুযোগ করে দেয়। পদ্মার পাড়ে সূর্যাস্ত দেখা যে কোনো বাবার মন ভালো করে দিতে বাধ্য।

৬. থানচি, বান্দরবান: অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী বাবার জন্য

আপনার বাবা যদি এখনও তরুণ মনে ও দুঃসাহসিক অভিজ্ঞতায় বিশ্বাসী হন, তাহলে থানচি ভ্রমণ হতে পারে তাঁর জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। সাঙ্গু নদীর নৌকা ভ্রমণ, রেমাক্রি ও নাফাখুম ঝরনার স্নিগ্ধতা, আর পাহাড়ি গ্রামগুলোতে একরাত—এই সবকিছুই তাঁকে দিবে নতুন রকমের অনুভব।

৭. টাঙ্গুয়ার হাওর, সুনামগঞ্জ: হাওরের জলে এক ভাসমান বিকেল

টাঙ্গুয়ার হাওরের জলরাশি, নৌকায় দিন কাটানো আর রাতের আকাশে তারার মেলা—বাবার সঙ্গে শেয়ার করার মতো স্মৃতি হয়ে থাকবে বহুদিন। হাউসবোটে এক রাত থাকার অভিজ্ঞতা যেমন বিরল, তেমনি তা একজন বাবার জন্য হতে পারে একান্ত প্রশান্তির সময়।

বাবা দিবসে উপহার হতে পারে শুধু একটি উপকরণ নয়, বরং একটি অনুভব—যা তাঁর জীবনে রেখে যাবে স্মৃতির ছাপ। আপনি যদি পারেন, তাহলে এবার বাবাকে দিন এমন এক সফরের অভিজ্ঞতা, যেটি তিনি সারা বছর ধরে মনে রাখবেন। কারণ, সময়ই তো সবচেয়ে বড় উপহার।

Leave a Reply

scroll to top