আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, যেখানে পারদ ছুঁয়েছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলমান অতি তাপপ্রবাহের ফলে পুরো জেলাজুড়ে নেমে এসেছে অচলাবস্থা। অফিসপাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার—সবখানেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে মানুষের উপস্থিতির ঘাটতি। এ অবস্থায় অনেক স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ ক্লাসের সময়সূচি কমিয়ে এনেছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের কোথাও উল্লেখযোগ্য বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, গরমের কারণে হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধদের আক্রান্তের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং হাসপাতালে অতিরিক্ত ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গতকালও এই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল, যা চলমান তাপপ্রবাহের স্থায়ীত্ব ও তীব্রতা নির্দেশ করে। টানা এই গরমে চুয়াডাঙ্গাজুড়ে নেমে এসেছে অচলাবস্থা। গরমের দাপটে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না বললেই চলে। তবে জীবিকার তাগিদে খেটে খাওয়া মানুষ বাধ্য হচ্ছেন রোদে বের হতে, যার ফলে তারা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে।
বিদ্যুৎ ও পানির সংকট
তীব্র গরমের মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিং জনদুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ঘর ঠান্ডা রাখার যন্ত্রপাতি কাজ করছে না, ফলে পানির সংকটও তৈরি হয়েছে। পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় শহরের অনেক এলাকায় ট্যাংকির পানি শেষ হয়ে যাচ্ছে বিকেলের আগেই।
কৃষিতে প্রভাব
চাষাবাদেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় শাকসবজি ও ধান চাষে সেচ ব্যয় বেড়ে গেছে। সেচে বিদ্যুতের ঘাটতি কৃষকদের জন্য বাড়তি বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চুয়াডাঙ্গার কৃষি অফিস জানিয়েছে, অতি গরমের কারণে কিছু ফসল অকালপক্ব হয়ে যাচ্ছে।
পরামর্শ ও প্রস্তুতি
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা ছাড়াও রাজশাহী, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া ও পাবনাতেও মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। আগামী ১৩ মে পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। জনসাধারণকে বেশি করে পানি পান, রোদে বের না হওয়া, হালকা ও সুতির পোশাক পরিধান, শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালানো হচ্ছে।