বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো উপেক্ষা করছে, যার ফলে বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতিমালাও কার্যকর হচ্ছে না।”
রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সোমবার ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম। সংলাপের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র (সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
আমীর খসরু বলেন, “এই সরকার কত দিন থাকবে, নির্বাচন কবে হবে, তার পরে দেশের ভবিষ্যৎ কী—এসব প্রশ্ন এখন জনগণের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।”
তিনি আরও বলেন, “যদি রাজনৈতিক নিশ্চয়তা না থাকে, তাহলে বাজেট কিংবা অর্থনীতি—কিছুই কাজে আসবে না।”
বর্তমান সরকারের বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। আমীর খসরু বলেন, “একটি প্রশ্নবিদ্ধ জিডিপির ওপর ভিত্তি করে বাজেট তৈরি হচ্ছে, যা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বাজেট ধারারই প্রতিফলন। দেশের বাস্তব অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় না নিয়ে তৈরি বাজেট কার্যকর হতে পারে না।”
মিয়ানমারের সঙ্গে মানবিক করিডর তৈরির প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি একটি স্পর্শকাতর ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অথচ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনায় না গিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।”
বাংলাদেশে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা এবং লুটপাট সৃষ্টি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার ভাষায়, “যত নিয়ন্ত্রণ, তত দুর্নীতি। এ চক্র ভাঙতে হলে নিয়ন্ত্রণহীন, উন্মুক্ত ব্যবসা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।”
তিনি দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক নির্দেশনা দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশকে এমন একটি মডেলে যেতে হবে, যেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য হবে উন্মুক্ত এবং প্রতিযোগিতামূলক। আমাদের স্লোগান হওয়া উচিত—‘We are open for business’.”
সংলাপে তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক সহনশীলতা ছাড়া অর্থনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। আমাদের সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে রাজনৈতিক ভিন্নমতকে সম্মান জানাতে হবে।”
এমএনএ