তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ—চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৮ ডিগ্রি, ঢাকায় ৩৯.৯

New-Project-14-5.jpg

তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

দেশজুড়ে চলমান তীব্র দাবদাহে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোববার (১১ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়—৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে রাজধানী ঢাকাতেও তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৯ ডিগ্রি, যা এই মৌসুমে ঢাকার অন্যতম সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের বেশ কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে—ঢাকা, ফরিদপুর, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জ। এইসব অঞ্চলে গরমের মাত্রা এতটাই তীব্র যে দুপুরের পর রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা হয়ে পড়ে।

আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, “এই তাপদাহের মূল কারণ হলো উত্তর ভারত এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে একটি শক্তিশালী লঘুচাপ। এই অবস্থায় বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাষ্প আসতে না পারায় আর্দ্রতা কমছে এবং বাতাসে উত্তপ্ততা বাড়ছে। ফলে দেশের অনেক স্থানে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাচ্ছে তাপমাত্রা।”

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা জানিয়েছেন, আজকের এই তাপমাত্রার তথ্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে হালনাগাদ হতে পারে। তবে আগামীকাল (সোমবার) থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “ঢাকায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা তাপপ্রবাহ কমাতে সাহায্য করবে।”

পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-একটি স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২-৩ দিন দেশের তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে না। তবে ১৪ মে’র পর থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হতে পারে, যা তাপপ্রবাহ কিছুটা প্রশমিত করতে পারে বলে আশা করছেন আবহাওয়াবিদরা

জনজীবনে ভোগান্তি

তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শ্রমজীবী ও দিনমজুর শ্রেণি। রাজধানীর মালিবাগে রিকশাচালক নজরুল ইসলাম বলেন, “রাস্তায় বের হই তীব্র রোদে পুড়তে পুড়তে। দুপুরের পর তাপ সইতে পারি না। কিন্তু না বের হলে খেয়ে বাঁচব কীভাবে?”

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন পর্যাপ্ত পানি পানের পাশাপাশি ছাতা ব্যবহার, হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান এবং দুপুরের রোদ এড়িয়ে চলার জন্য।

Leave a Reply

scroll to top