দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরলে গুলশান-২ এর এভিনিউ রোডে অবস্থিত ১৯৬ নম্বর বাড়িটিই হতে যাচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আবাসস্থল। দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই দোতলা ডুপ্লেক্স বাড়িটি তাঁর মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মালিকানাধীন। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ির নামজারির কাগজপত্র তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এক সময় এ বাড়িটি ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করত ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটি)। ছয় মাস আগে কোম্পানিটি ছেড়ে দিলে, তা সংস্কার করে তারেক রহমানের বসবাস উপযোগী করা হয়। বর্তমানে বাড়িটি বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানা গেছে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে।
১৯৮১ সালের ৩১ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের এই বাড়িটি বরাদ্দ দেয়। এটি তাঁর বর্তমান বাসভবন ‘ফিরোজা’র কাছাকাছি অবস্থিত। অতীতে সেনানিবাসে আরেকটি বাড়িও বরাদ্দ পেয়েছিলেন তিনি, তবে সেটি পরবর্তীতে বাতিল করে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাদা রঙের ছায়াঘেরা বাড়িটির বাহ্যিক সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা চোখে পড়ার মতো। অভ্যন্তরও দৃষ্টিনন্দন ও আরামদায়ক করে সাজানো হয়েছে। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডনে ফিরে যাওয়ার আগে বাড়িটি নিজে পরিদর্শন করেছেন।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষিত হলেই ফিরবেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরতে পারেন বিএনপির ভবিষ্যতের কান্ডারি।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেফতার হন তারেক রহমান। জামিনে মুক্তি পেয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান এবং দীর্ঘ ১৭ বছর সেখানেই অবস্থান করেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২০১৮ সালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন।
বিগত সরকার আমলে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া শতাধিক মামলার মধ্যে পাঁচটিতে দণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে সরকারের পতনের পর আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি সব মামলায় খালাস পান। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই বলে নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জানিয়েছেন, তারেক রহমান ‘খুব শিগগিরই’ দেশে ফিরছেন।
সব প্রস্তুতি শেষ—এখন শুধু অপেক্ষা সেই বহুল প্রতীক্ষিত মুহূর্তের, যখন দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে পা রাখবেন তারেক রহমান।
