রক্ত ঝরা দুর্লভ বৃক্ষ!

ইয়েমেনের আনন্দদ্বীপ খ্যাত সোকোত্রায়া থেকে এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ বৃক্ষ ‘ড্রাগন ব্লাড ট্রি’।

ইয়েমেনের আনন্দদ্বীপ খ্যাত সোকোত্রায়া থেকে এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ বৃক্ষ ‘ড্রাগন ব্লাড ট্রি’।

মুহাম্মদ নূরে আলম

হুবহু ব্যাঙের ছাতার মতো দেখতে! রসিক পর্যটকরা ভালোবেসে একে ‘মরু ছাতা’ও বলেন। আসলে এটি একটি গাছ—পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ বৃক্ষ। স্থানীয়দের কাছে এ শুধু গাছ নয়; কারও কাছে মা, কারও কাছে সন্তান। কিতাবি ভাষায়, এটি ইয়েমেনের শান্ত দ্বীপ সোকোত্রার প্রাণ, এক জীবন্ত ইতিহাস, আনন্দদ্বীপের নীরব প্রহরী।

ড্রাগন ব্লাড ট্রি

‘ড্রাগন ব্লাড ট্রি’ নামে খ্যাত এই গাছ তার পুরু ছাল-বাকলে লুকানো রক্তলাল রসের জন্য বিখ্যাত। হাজার বছরের ঐতিহ্য বহন করে এটি আরব সাগরের উত্তপ্ত মরুদ্বীপকে মায়ের মতো ছায়া দিয়ে আগলে রেখেছে। কিন্তু আজ এই গাছ নিজেই সংকটে—বার্ধক্য নয়, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন, ঘূর্ণিঝড়, ছাগলের অবাধ চারণ, আর ইয়েমেনের দীর্ঘ যুদ্ধের তেজস্ক্রিয়ায় এর প্রাণ নিভছে।

ড্রাগন ব্লাড ট্রি

সোকোত্রা দ্বীপে, জীববৈচিত্র্যের আধারে, শুধুমাত্র এই বিরল ‘ড্রাগন ব্লাড ট্রি’ জন্মায়। প্রতি বছর প্রায় ৫,০০০ পর্যটক এই দ্বীপে আসেন, যেখানে ৮২৫ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে এই ‘ব্যাঙের ছাতা’ই প্রধান আকর্ষণ। ছোট শেকড়ে (৩-১০ ফুট গভীর) গ্যালন গ্যালন পানি ধরে রাখা এই গাছ বাঁচাতে একদল বৃক্ষপ্রেমী চারা লাগিয়ে নার্সারি পরিচালনা করছেন। দ্বীপবাসীরাও এই বিলুপ্তপ্রায় সন্তানকে বাঁচাতে লড়াই করছেন।

এই গাছের জন্মরহস্য নিয়ে আরবদের মুখে দুটি লোকগাঁথা প্রচলিত। আরবিতে এর নাম ‘দাম আল-আখাওয়াইন’ বা ‘দুই ভাইয়ের রক্ত’। কথিত আছে, প্রথম গাছটি জন্মেছিল যেখানে দুই ভাই—দারসা ও সামহা—মৃত্যু পর্যন্ত লড়েছিলেন। আবার কেউ কেউ বলেন, একটি ড্রাগনের রক্তের ফোঁটা থেকে এই গাছের জন্ম, যখন সে একটি বিশাল হাতির সঙ্গে লড়াই করেছিল।

তথ্যসূত্র: এপি, দ্য গার্ডিয়ান

মুহাম্মদ নূরে আলম

মুহাম্মদ নূরে আলম

মুহাম্মদ নূরে আলম (Muhammad Noora Alam) একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক ও কনটেন্ট বিশেষজ্ঞ, যিনি পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রিন্ট, অনলাইন এবং ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ঢাকা পোস্ট, নয়াদিগন্ত, বিজনেস মিরর এবং শিরোনাম মিডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমে সাব-এডিটর ও কনটেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এনভিডিয়া ও দুবাই ওয়ান মিলিয়ন প্রমপ্টার্স থেকে জেনারেটিভ এআই ও প্রমপ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সনদপ্রাপ্ত। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পাঠকবান্ধব, প্রাসঙ্গিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রভাব ফেলতে সক্ষম কনটেন্ট তৈরিতে তার দক্ষতা অনন্য। ব্যবসা, প্রযুক্তি, সমাজ ও সমসাময়িক বিষয়ের উপর লেখালেখিতে তার পারদর্শিতা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি ‘স্বপ্নবাজ ফাউন্ডেশন’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘রেঁনেসা ফাউন্ডেশন’-এর মিডিয়া প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।

Leave a Reply

scroll to top