৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধে ভারত-পাকিস্তানের কত বিলিয়ন ক্ষতি?

Aerial view of India-Pakistan Kashmir conflict showing military jets and economic loss charts, highlighting billions in damages in 2025.
মুহাম্মাদ নূরে আলম

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে উভয় দেশের দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু। এই হামলার পর থেকে উভয় দেশ সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করে, যা ৭ মে রাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ নেয়।

অপারেশন সিঁদুর: ভারতের হামলা

৭ মে রাত ১টা ৫ মিনিটে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের নয়টি অবস্থানে ২৩ মিনিটব্যাপী হামলা চালায়। এই অভিযানে ব্যবহৃত হয় ফ্রান্সের তৈরি ড্যাসল্ট রাফাল যুদ্ধবিমান, যা ৫৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং নির্ভুল গ্লাইড বোমা নিক্ষেপে সক্ষম। এই যুদ্ধবিমানগুলোর উন্নত প্রযুক্তি ভারতের আকাশ শক্তিকে শক্তিশালী করেছে।

এছাড়া, ৭ থেকে ১০ মে ভারত পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা খুঁজতে ইন্দো-ইসরায়েলি স্কাইস্ট্রাইকার এবং ইসরায়েলি হারোপ ড্রোন ব্যবহার করে। এই ড্রোনগুলো লক্ষ্যে আঘাত করার পাশাপাশি রাডার ও ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। ভারতের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর উন্মোচন করা।

পাকিস্তানের পাল্টা হামলা  

পাকিস্তান তাৎক্ষণিক পাল্টা জবাবে তাদের চেংডু জে-১০ সি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। এই বহুমাত্রিক যুদ্ধবিমান দৃষ্টিসীমার বাইরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধাস্ত্র বহনে সক্ষম। ৭ মে রাত ১টা ৫ থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তান ভারতের তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান এবং ১২টি ড্রোন ধ্বংস করে। এটি রাফালের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম ক্ষতির ঘটনা। পাকিস্তান দাবি করে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারতের ড্রোনগুলোকে বিমান বিধ্বংসী কামান ও ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করেছে।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব 

৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের এই সংঘাত উভয় দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ভারতের পুঁজিবাজারে ৮২ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। উত্তরাঞ্চলের আকাশপথ বন্ধ থাকায় বিমান চলাচলে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ডলার, আইপিএল বন্ধে ৫০ মিলিয়ন ডলার, সামরিক খরচে ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং যুদ্ধবিমান ক্ষতিতে ৪০০ মিলিয়ন ডলার লোকসান হয়। বাণিজ্য ও লজিস্টিক ব্যাঘাতে আরও ২ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি যোগ হয়। মোট ক্ষতি প্রায় ৮৩ বিলিয়ন ডলার।  

পাকিস্তানের কেএসই-১০০ সূচক ৪.১% পড়ে, শেয়ারবাজারে ২.৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। পিএসএল বন্ধে ১০ মিলিয়ন ডলার, বিমান পরিবহনে ২০ মিলিয়ন ডলার এবং সামরিক খরচে ৩২৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়। মোট ক্ষতি প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার। এই সংঘাতে পুঁজিবাজারে ধস, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাসের মতো সমস্যা উভয় দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করে।

বৃহত্তর প্রভাব ও ভবিষ্যৎ  

এই সংঘাত কেবল আকাশপথে সীমাবদ্ধ ছিল না। সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন, বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ক্ষতি এবং ক্রীড়া ইভেন্ট বাতিলের ফলে জনজীবনেও প্রভাব পড়ে। কাশ্মীর ইস্যুতে উভয় দেশের দীর্ঘদিনের বৈরিতা এই ঘটনায় নতুন মাত্রা পায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানালেও, সামরিক প্রতিযোগিতা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।  

ভারত ও পাকিস্তানের এই সংঘাত প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মাধ্যমে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই করেনি, বরং দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা জরুরি।

 

Leave a Reply

scroll to top