সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সবজি ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম হত্যা মামলায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম. আলী আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রফিক সরকার জানান, এ মামলায় মোট ৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তবে আসামি সাইফুল ইসলাম হাজী ছয়ফুল মামলার বিচারের আগেই মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬ জন পলাতক থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে আদালত রায় প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার পারধুন্দিয়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে খাজা মিয়া, তার ভাই বাবু, হরিনাথপুর বিষপুকুর গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে এনামুল, দরগাপাড়া এলাকার মৃত মজিবর শেখের ছেলে মোজাহিদ, মাদারদহ পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সাইদুল ইসলাম ও রামনগর (হাটবাড়ি) গ্রামের নজরুল ইসলাম সরকারের ছেলে মিলন সরকার। তাদের সকলের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।
অভিযোগ পত্রে যা ছিল
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার নাজমুল ইসলাম একজন সবজি ব্যবসায়ী। তিনি নওগাঁ জেলার চকগৌরী বাজার থেকে সবজি ক্রয় করে ঢাকার বাইপাইল এলাকায় সবজির আড়তে বিক্রি করতেন। ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট চকগৌরী হাট থেকে বিভিন্ন প্রকার সবজি ক্রয় করে ট্রাকযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরদিন ১১ আগস্ট নাজমুল ইসলাম মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীকে জানায়, কিছু মালামাল বিক্রি হয়েছে। বাকি মালামাল বিক্রি হলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করবেন।
ওই রাত রাত ১২টার দিকে নাজমুলের মোবাইল ফোন হতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে কল করে বলে যে, নাজমুলকে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকা হতে একটি কালো বড় মাইক্রোতে কিডন্যাপ করা হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা পেলে ছেড়ে দিবে। তখন নাজমুলের স্ত্রী রাবেয়া টাকা কিভাবে পাঠাবে জানতে চাইলে পরের দিন ১২ আগস্ট একটি বিকাশ নাম্বার দেবে বলে জানায়। তবে রাতেই ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের রূপসী বাংলা খাবার হোটেলের পাশে বট গাছের নিচে নাজমুলের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এঘটনায় নাজমুলের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ৭ জানের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ স্বাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আজ মঙ্গলবার আদালতের বিচারক ৬ আসামীর মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন