ভর্তি পরীক্ষার্থীকে ‘চোর’ সম্বোধন করে হেনেস্তার অভিযোগ রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

New-Project-14-8.jpg

ভর্তি পরীক্ষার্থীকে ‘চোর’ সম্বোধন করে হেনেস্তার অভিযোগ রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে এক নারী পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে ডিউটিরত এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়াও পোষাক নিয়ে খারাপ মন্তব্য ও ‘চোর’ বলে সম্বোধন করে খাতা কেড়ে নিয়ে দুর্ব্যবহার করেছেন বলে জানিয়েছেন ঐ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রক্টর দফতরে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দেন তিনি।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে প্রথম শিফটের পরীক্ষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৪০৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন- মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সরকার। অন্যদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আনিকা তাসনীম জেবা।

লিখিত অভিযোগপত্রে যা লিখা ছিল

লিখিত অভিযোগপত্রে ঐ পরীক্ষার্থী উল্লেখ করেন, পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধা-ঘণ্টা পর দায়িত্বরত শিক্ষক স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য আমার কাছে আসেন। আমার মাথায় ওড়না থাকায় এবং প্রবেশপত্রের ছবিতে মাথায় ওড়না না থাকায় তিনি আমাকে ধমক দেন এবং বলেন, ‘তুমি যেভাবে ছবি উঠিয়েছ, সেভাবে যেহেতু আসোনি, সেহেতু এই ক্যাম্পাসে প্রবেশের অধিকার নেই’। এ ছাড়া তিনি অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। আমাকে ‘চোর’ বলে সম্বোধন করেন এবং বলেন ‘একে সাইজ করা দরকার’।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এক পর্যায়ে তিনি আমার খাতা কেড়ে নেন এবং প্রায় ১০ মিনিট পর ফেরত দেন। তার ধমক এবং ভাষা শুনে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। ফলে আমি ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারিনি। তিনি যদি দুর্ব্যবহার না করতেন, আমি আরো কয়েক নম্বর বেশি পেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের নিকট থেকে এমন দুর্ব্যবহার পরীক্ষার হলে আমি আশা করিনি।

ভুক্তভোগীর বক্তব্য

ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী আনিকা তাসনীম বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে একজন দায়িত্বরত শিক্ষকের আচরণ এমন হতে পারে না। আমার পোশাক নিয়ে তিনি কেন কথা বলবেন? বর্তমান সময়ে এসেও নারীদের পোশাক নিয়ে কথা শুনতে হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি

অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে অভিযুক্ত শিক্ষক ওমর ফারুক সরকার বলেন, আজ প্রথম শিফটের পরীক্ষায় ৪০৮ নম্বর কক্ষে আমিসহ আরো দুইজন ডিউটিতে ছিলাম। ঐ শিক্ষার্থী আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার মনে হচ্ছে, তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দিয়েছে, কারণ এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক ওমর ফারুক সরকারের বরাতে জানা যায়, এদিন ঐ কক্ষে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারাহ্ নাওয়াজ ডিউটিতে ছিলেন। ঘটনার সত্যতা জানতে এই অধ্যাপকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

কি বলছেন উপ-উপচার্য

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত হয়েছি। প্রক্টর অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ঐ শিক্ষার্থী। উপাচার্য স্যার বিষয়টি অবহিত করার জন্য আমাকে বলেছেন। আমি উিউটি লিস্টটা সংগ্রহ করেছি। ঐ কক্ষে ওমর ফারুক স্যারসহ আরো দুইজন ম্যাডাম ডিউটিতে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ঐ শিক্ষকই এমন কাজ করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ঐ কক্ষের দায়িত্বে থাকা বাকি দুইজন ম্যাডাম, পিওনসহ সবার সঙ্গে কথা বলে প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

scroll to top