সিলেট-ময়মনসিংহে নদীর পানি বৃদ্ধি, বন্যার শঙ্কা

New-Project-29.jpg

সিলেট-ময়মনসিংহে নদীর পানি বৃদ্ধি

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তত আটটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ২ জুনের (সোমবার) পূর্বাভাস অনুযায়ী, সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সারি, গোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই ও সোমেশ্বরী নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি বা ওপরে প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নদ-নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীগুলোর পানি সমতল আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে, দ্বিতীয় দিনে স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী এক দিনে হ্রাস পেতে পারে। এই সময়ে মুহুরী, ফেনী ও হালদা নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে তা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীগুলোর পানি সমতল আগামী চার দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচে থাকবে। পরবর্তী এক দিনে পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।

গঙ্গা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং পদ্মা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী পাঁচ দিন গঙ্গা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে উভয় নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

অতিরিক্ত প্রেক্ষাপট

২০২৪ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়, যা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ ১১টি জেলায় প্রায় ৫.৮ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে অতিরিক্ত পানি প্রবাহ এবং অতিবৃষ্টির কারণে এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বন্যায় ৭১ জনের মৃত্যু হয় এবং ৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে বাধ্য হন। এই দুর্যোগে প্রায় ২৯৬,৮৫২ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৪৪ বিলিয়ন টাকা (১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে, বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি পূর্ববর্তী বছরের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। তাই সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

scroll to top