জাতিসংঘ পরিষদে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস

New-Project-2025-06-14T152832.466.png
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) অনুষ্ঠিত এক জরুরি ও বিশেষ অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি বিপুল ভোটে অনুমোদিত হয়, যা গাজার চলমান মানবিক সংকট নিরসনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জোরালো অবস্থানের প্রতিফলন।

প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশসহ ১৪৯টি দেশ, যা গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে বিশ্বজুড়ে জোরালো সমর্থনকে তুলে ধরে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ মাত্র ১২টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এছাড়া, ১৯টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। এই ভোটের ফলাফল গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক দায়িত্ব ও সংহতি প্রদর্শনের একটি স্পষ্ট বার্তা।

পাস হওয়া এই প্রস্তাবে গাজার মানুষের জন্য কোনো বাধা ছাড়াই মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। দীর্ঘদিনের অবরোধ ও সংঘাতে গাজার বেসামরিক মানুষ তীব্র খাদ্য ও পানীয় সংকটে ভুগছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রস্তাবে যুদ্ধের ভয়াবহতায় ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা জানানো হয়, যা যুদ্ধের মানবিক দিকগুলোর প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

সভায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে, নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘে এই প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধ করে সেখানকার মানুষের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি আরও জোরালো হলো।

এই প্রস্তাব পাস হওয়াকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্বাগত জানিয়েছে। এটি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলো নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের মতো আইনত বাধ্যতামূলক নয়, তবে এর নৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব অনেক গভীর।

তবে এটি আন্তর্জাতিক জনমতকে প্রতিফলিত করে এবং সংঘাতের পক্ষগুলোকে একটি স্থায়ী সমাধানের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং মানবিক সংকট মোকাবিলায় এই প্রস্তাব একটি নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

scroll to top