পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে রেমিট্যান্স প্রবাহে চাঙাভাব লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৬১ কোটি মার্কিন ডলার—বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)।
ঈদ উপলক্ষে কোরবানির পশু কেনাসহ নানাবিধ পারিবারিক খরচ মেটাতে বাড়তি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো মে মাসে প্রবাসী আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা কমেছে এবং অর্থপাচার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফলে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মার্চ মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এপ্রিলেও এ প্রবণতা বজায় ছিল, তখন এসেছে ২৭৫ কোটি ডলার।
মে মাসের প্রথম ১৭ দিনের হিসাব অনুযায়ী:
-
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো পেয়েছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার
-
বেসরকারি ব্যাংকগুলো পেয়েছে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার
-
বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংক পেয়েছে ১৫ কোটির বেশি
-
বিদেশি ব্যাংক পেয়েছে ৩১ লাখ ডলার
তবে ৯টি ব্যাংকে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি, যার মধ্যে রয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও সীমান্ত ব্যাংক। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার নাম রয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের পূর্ববর্তী মাসগুলোতেও রেমিট্যান্স ছিল ঊর্ধ্বমুখী। নিচে মাসভিত্তিক প্রাপ্তির সংক্ষিপ্ত চিত্র:
মাস | রেমিট্যান্স (কোটি ডলার) |
---|---|
জুলাই | ১৯১ |
আগস্ট | ২২২ |
সেপ্টেম্বর | ২৪০ |
অক্টোবর | ২৩৯ |
নভেম্বর | ২২০ |
ডিসেম্বর | ২৬৪ |
জানুয়ারি | ২১৯ |
ফেব্রুয়ারি | ২৫২ |
মার্চ | ৩২৯ (সর্বোচ্চ) |
এপ্রিল | ২৭৫ |
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির এ ধারা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করছে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।