গবেষণার মান, গুণগত উৎকর্ষ ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে এক অনন্য অবস্থানে পৌঁছেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। যুক্তরাজ্যভিত্তিক খ্যাতনামা বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার ইনডেক্স-এর ২০২৫ সালের র্যাংকিং অনুযায়ী, দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণার গুণগত মান ও সংখ্যায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছে রাবি।
অন্যদিকে, সার্বিকভাবে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
নেচার ইনডেক্সের প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকাটি ২০২৪ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়কালে প্রকাশিত গবেষণাকর্মের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
র্যাংকিং অনুসারে, সার্বিকভাবে বাংলাদেশে দ্বিতীয়, এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে রাবি। আন্তর্জাতিক পরিসরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ২,৭৩৪তম, আর একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ১,৮৪৫তম।
বিশেষ করে রসায়ন বিষয়ে রাবি দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে এবং বিশ্বে অবস্থান ১,৮২১তম। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় এবং বৈশ্বিক অবস্থান ১,৬০৩তম।
এই এক বছরের মধ্যে রাবির গবেষকেরা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তিনটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে:
- ‘Environmental Health Perspectives’ জার্নালে একটি গবেষণার শেয়ার ০.৬৮
- ‘Inorganic Chemistry’ জার্নালে আরেকটি গবেষণার শেয়ার ০.৮৩
- ‘The Lancet’ জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণার মাধ্যমে সর্বমোট শেয়ার দাঁড়িয়েছে ১.৫২
এবারের র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে ৫৯তম অবস্থানে রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশের অবস্থান মালয়েশিয়ার ঠিক পরেই। তালিকার শীর্ষে রয়েছে চীন।
রাবির এই ঐতিহাসিক সাফল্য নিয়ে ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন,
“বিশ্বখ্যাত নেচার ইনডেক্স ২০২৫-এ দেশের সেরা একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাবি শীর্ষে স্থান পেয়েছে—এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এটি আমাদের গবেষণা ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্জন। ভবিষ্যতে আরও মানসম্পন্ন গবেষণার মাধ্যমে আমরা এই অবস্থান আরও দৃঢ় করব ইনশাআল্লাহ।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন,
“এটা রাবির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গবেষণা অর্জন। এই সপ্তাহেই আমরা ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি অতিরিক্ত গবেষণা প্রকল্প অনুমোদন করেছি। প্রথমবারের মতো ছাত্রগবেষকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় তার এই সাফল্য ধরে রাখতে পারবে।”
গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তিনি বলেন,
“গবেষণায় আমরা তুলনামূলকভাবে কম বরাদ্দ পেলেও আমাদের গবেষকেরা অসাধারণ কাজ করছেন। যদি প্রণোদনা ও বরাদ্দ আরও বাড়ানো হয়, তাহলে রাবি গবেষণার ক্ষেত্রে আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে পারবে।”