জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল

New-Project-26-1.jpg

জাবিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগকে “গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দল” আখ্যা দিয়ে তা নিষিদ্ধের দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৯ মে) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা চত্বর থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি প্রধান ফটক পর্যন্ত পদযাত্রা করে।

মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের নতুন ভবন, সমাজবিজ্ঞান ভবন অতিক্রম করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সংলগ্ন মূল ফটকে এসে শেষ হয়। সেখানেই আয়োজিত হয় একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশে গণতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর গণহত্যার মাধ্যমে নিজেকে “ফ্যাসিবাদী শক্তি” হিসেবে প্রমাণ করেছে। তারা বলেন, জনগণের রক্তের বিনিময়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলেও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি, যা হতাশাজনক।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য

সমাবেশে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসাইনের সঞ্চালনায় বক্তৃতা দেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আনজুম শাহরিয়ার, রসায়ন বিভাগের রাকিব হোসাইন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল হাসান লিমন এবং জিয়া উদ্দিন আয়ান। তারা সবাই একযোগে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করা হলে দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ আরও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।”

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হোসাইন বলেন, “দুই হাজার ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি নতুন বাংলাদেশ। সেই নতুন বাংলাদেশের প্রথম দাবিই ছিল আওয়ামী লীগের বিচার। কিন্তু ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এখনো তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আমরা সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।”

বক্তারা আরও জানান, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত “ছাত্র-জনতার আত্মদান” ছিল আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটি গণঅভ্যুত্থানের সূচনা। এই প্রেক্ষাপটে তারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চেষ্টাকে ‘অবমাননাকর’ ও ‘জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে আখ্যা দেন। কেউ কেউ বলেন, “আবারও যদি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার দিকে ঠেলা হয়, তাহলে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’র মতো কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে আমরা দ্বিধা করব না।”

স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল ক্যাম্পাস

সমাবেশে উত্তপ্ত স্লোগান ও প্রতিবাদী সুরে শিক্ষার্থীরা আওয়াজ তোলেন:

“ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হুশিয়ার সাবধান”,
“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে—করতে হবে”,
“জুলাই হত্যার বিচার কর”,
“ডাইরেক্ট অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন”,
“গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে”।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের প্রতিবাদ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক চেতনা ও তরুণদের ভূমিকা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে।

Leave a Reply

scroll to top