জাবিতে কুরআন অনুবাদ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

New-Project-24.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ জাবি প্রতিনিধি,

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কুরআন অ্যান্ড কালচারাল ক্লাব আয়োজিত “৫ম কুরআনের পাঠ ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা”-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সেমিনার কক্ষে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৫০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

এ বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল বাক্বী অনুষ্ঠানে বলেন, নিষিদ্ধতা থেকে বিরত থাকলে মানুষ পবিত্র হয়, আর পবিত্রতা মানুষকে সম্মানিত করে। যারা মসজিদুল হারামের দিকে ধাবিত হয়, তাদেরই আল্লাহ জান্নাতে স্থান দেন এবং তাঁর সাক্ষাৎ লাভের সুযোগ দেন। এটি মানবজীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা।

কুরআনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি জীবনের প্রকৃত সংজ্ঞা পেয়েছি সূরা আলে ইমরানে, যা অন্য কোথাও পাইনি। তিনি বলেন, অন্তত ছয়বার অর্থসহ কুরআন পড়া উচিত। কুরআনের তথ্য ও জ্ঞান এত গভীর যে তা অনুবাদে পুরোপুরি ধরা সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানের মূল আলোচক মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, অগস্ট বিপ্লবের সময় যারা পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন, তাদের সেই আহ্বান বাস্তবায়নের জন্য আমাদের নিজেদের পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের অভ্যাস হচ্ছে অন্যের পরিবর্তনের কথা বলা, অথচ নিজের পরিবর্তনের উদ্যোগ নেই। যেই আলো আমাদের জীবনকে বদলাতে পারে, সেই আলো—আল-কুরআনের—সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

কুরআন অনুবাদ প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে আলো আনার জন্য যা কিছু দরকার, তা সূরা ইউসুফ ও সূরা ক্বা’ফ-এ রয়েছে। হতাশা, পারিবারিক সংকট বা মানসিক চাপ—এসব সমস্যার সমাধান সূরা ইউসুফে খুঁজে পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, প্রতি জুমায় সূরা ক্বা’ফ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে হেফাজত করবেন। অহংকার ও ক্ষমতার মোহে আমরা দৃষ্টি হারিয়েছি, সূরা ক্বা’ফ সেই অন্ধত্ব দূর করার শিক্ষা দেয়।

হজরত মূসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর ঘটনার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, যে যত বেশি জ্ঞান অর্জন করে, সে তত বেশি বিনয়ী হয়। কোনো বিপর্যয়ের পেছনেও কল্যাণ থাকতে পারে, এই দৃষ্টিভঙ্গি কুরআন শেখায়। কুরআন এমন একটি কিতাব—যত গভীরে যাবেন, ততই মাধুর্য অনুভব করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রব বলেন, কুরআন জানা ও বোঝা মুসলমান হিসেবে অপরিহার্য। সঠিকভাবে কুরআন শিখে তা অনুসরণ করতে হবে এবং অন্যদেরকেও জানাতে হবে। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষা ও সংস্কৃতির পাশাপাশি ইসলামী চর্চাতেও জাবির গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জাবির শিক্ষার্থীরা দেশের সব সেক্টরে তাদের যোগ্যতার ছাপ রাখবে।

ক্লাবটির (ফিমেইল সেকশন) উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক শামিমা নাসরিন জলি বলেন, আমাদের জীবন এমন হওয়া উচিত, যাতে মানুষ আমাদের দেখে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। নবী মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তের পূর্বে ‘আল-আমিন’ নামে পরিচিত ছিলেন, যা তাঁর চারিত্রিক উৎকর্ষতার প্রতিফলন।

তিনি আরও বলেন, পর্দা শুধু বাহ্যিক নয়; বরং তা চরিত্রের সৌন্দর্যের মাধ্যমেও পরিপূর্ণ হওয়া উচিত। আমরা রমাদানে অনেকবার কুরআন খতম করি, কিন্তু সে শিক্ষাগুলো জীবনে বাস্তবায়ন হয় না। কুরআনের ব্যাকরণ ও ভাষা হৃদয় ছুঁয়ে যায়, যদি তা বুঝে পড়া যায়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কোরান এন্ড কালচারাল ক্লাবের উপদেষ্টা (মেইল সেকশন) অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, কোরান এন্ড কালচারাল স্টাডি ক্লাবের (ফিমেইল সেকশন) উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক শামিমা নাসরিন জলি, অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন।

Leave a Reply

scroll to top