আগামীকাল সোমবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। নিজেদের তিন দফা দাবি আদায়ে এর আগেও দফায় দফায় কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। আজ রোববার (২৫ মে) দুপুরে শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ৫ মে থেকে শুরু হওয়া তাদের আন্দোলন ধাপে ধাপে জোরদার করা হয়েছে। প্রথমত ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। এরপর ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা এবং ২১ মে থেকে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, এবার সরাসরি পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন তারা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলে আসছিল। তবে, সম্প্রতি গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কনসালটেশন কমিটি সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১২তম গ্রেড বাস্তবায়নের সুপারিশ করে। এই সুপারিশে সন্তুষ্ট নন শিক্ষকরা। তারা এখন এই সুপারিশের সংস্কার করে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
শিক্ষকদের মূল তিন দফা দাবিগুলো হলো:
১. বেতন গ্রেড সংস্কার: সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করতে হবে।
২. উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন: ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে জটিলতা রয়েছে, তার নিরসন করতে হবে।
৩. দ্রুত পদোন্নতি ও শতভাগ প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি: প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ সহকারী শিক্ষকদের দ্রুত পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজারেরও বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এই বিদ্যালয়গুলোতে পৌনে ৪ লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন।
বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম। শিক্ষকরা মনে করছেন, তাদের বর্তমান বেতন কাঠামো তাদের যোগ্যতা ও কাজের তুলনায় ন্যায্য নয়। এই দাবিতেই তারা কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন।
শিক্ষকদের এই পূর্ণদিবস কর্মবিরতি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদানে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।