পোপ ফ্রান্সিস আর নেই

Pope Francis Obituary: Humble Reformer Who Clashed with Conservatives

পোপ ফ্রান্সিস, আমেরিকা মহাদেশ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ, ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন বলে ভ্যাটিকান জানিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভ্যাটিকানের নিজ বাসভবন কাসা সান্তা মার্তায় সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে মারা গেছেন পোপ ফ্রান্সিস। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। খ্রিস্টান বিশ্বে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত ও প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসি

ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল এক শোকবার্তায় বলেন, “প্রিয় ভাই ও বোনেরা, গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের পবিত্র পিতা ফ্রান্সিস ইহলোক ত্যাগ করেছেন। তাঁর সমগ্র জীবন ছিল প্রভু ও গির্জার সেবায় উৎসর্গিত।”

মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেই, রোববার (২০ এপ্রিল) তিনি ইস্টার সানডেতে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে উপস্থিত ছিলেন। হুইলচেয়ারে বসা অবস্থায় ব্যালকনি থেকে ভক্তদের উদ্দেশে হাত নেড়ে বলেছিলেন, “প্রিয় ভাই ও বোনেরা, শুভ ইস্টার।” শারীরিক দুর্বলতার কারণে ঐতিহ্যবাহী ইস্টারের বার্তা পাঠ করেন তাঁর এক সহযোগী।

২০১৩ সালে আর্জেন্টিনার কার্ডিনাল হোর্হে মারিও বারগোলিও পোপ নির্বাচিত হন। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে পোপের আসনে বসেন। তাঁর আগে ৭৪১ সালে সিরিয়ায় জন্ম নেওয়া গ্রেগরি তৃতীয় ছিলেন সর্বশেষ ইউরোপের বাইরের পোপ। ফ্রান্সিস একইসঙ্গে প্রথম জেসুইট সদস্য যিনি রোমান ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হন। যিশু সংঘ বা জেসুইট সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি একসময় রোমের মনোভাব ছিল দ্বিধান্বিত; সেই ইতিহাসকে পেছনে ফেলে তিনিই এই সংঘের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নেন।

তার পন্টিফিকেটকাল ছিল পরিবর্তন ও সংস্কারের প্রতীক। জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, দারিদ্র্য এবং আন্তঃধর্মীয় সংলাপের মতো বিষয়গুলোতে তিনি স্পষ্ট অবস্থান নেন। তিনি ঐতিহ্যগত ক্যাথলিক গোঁড়ামির বাইরে এসে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নেতৃত্ব দেন, যা গির্জার ভেতরে ও বাইরেও প্রশংসিত হয়।

পোপ ফ্রান্সিস তার জীবনের শেষদিকেই জানিয়েছিলেন, তিনি চান তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হোক খুবই সরল। যেখানে পূর্বের পোপদের তিনটি কফিন (সাইপ্রাস কাঠ, সীসা ও ওক কাঠ) ব্যবহৃত হতো, সেখানে ফ্রান্সিস বেছে নিয়েছেন একটি সাধারণ কাঠের কফিন, যার ভেতরে থাকবে দস্তার স্তর।

তিনি হবেন এক শতাব্দীর মধ্যে প্রথম পোপ, যাকে ভ্যাটিকানের বাইরে সমাহিত করা হবে। তাকে দাফন করা হবে রোমের চারটি প্রধান পাপাল বাসিলিকার একটি—সেন্ট মেরি মেজর বাসিলিকায়।

তার মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টান সমাজে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ধর্মীয় নেতৃত্বে দয়ালু, প্রগতিশীল ও সাহসী একজন মানুষকে হারালো গির্জা ও বিশ্ব।

Leave a Reply

scroll to top