দেশজুড়ে বিরাজমান তীব্র গরমে যখন দিনভর হাঁসফাঁস করছে মানুষ, তখন এসি ছাড়া ঘরে থাকা যেন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ কৌশল মেনে চললে এসি ছাড়াও ঘরকে তুলনামূলক ঠান্ডা রাখা সম্ভব।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ঘরে উঠানামা করছে। ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংকট ও আর্থিক সাশ্রয়ের দিক বিবেচনায় অনেকেই এসি ব্যবহার করতে পারছেন না।
তবে নিচের কিছু উপায় মেনে চললে গরমে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে:
১. পর্দা ও জানালার ব্যবহার:
দিনের সবচেয়ে গরম সময়—দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত—জানালা বন্ধ রাখুন এবং মোটা, গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করুন। সূর্যের সরাসরি আলো আটকালে ঘরের তাপমাত্রা অন্তত ৫-৭ ডিগ্রি কম রাখা সম্ভব।
২. ভেজা কাপড় বা তোয়ালে:
ঘরের দরজা বা জানালায় ভেজা পাতলা কাপড় ঝুলিয়ে রাখুন। বাতাস সেই কাপড়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ঠান্ডা হয়ে ঘরে প্রবেশ করে, যা একটি প্রাকৃতিক এয়ার কুলারের মতো কাজ করে।
৩. বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন:
বিভিন্ন কোণে ফ্যান রাখুন এবং জানালার একটি অংশ খোলা রাখুন যাতে ঘরে ক্রস ভেন্টিলেশন হয়। এমনভাবে ফ্যান রাখুন যাতে তা গরম বাতাসকে বাইরে বের করে দেয়।
৪. রাতে ঘরের তাপ বের করে দিন:
রাতের বেলা বাইরে যখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে, তখন সব জানালা খুলে দিয়ে ঘরের ভেতরে জমে থাকা গরম বাতাস বের করে দিন। এতে ঘর ঠান্ডা থাকবে।
৫. বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার সীমিত করুন:
ওভেন, হেয়ার ড্রায়ার, কম্পিউটার ইত্যাদি যন্ত্রপাতি অতিরিক্ত গরম তৈরি করে। খুব প্রয়োজন না হলে এসব যন্ত্রপাতি দিনের গরম সময়ে ব্যবহার না করাই ভালো।
৬. হালকা বিছানাপত্র ও তুলতুলে বস্ত্র ব্যবহার করুন:
ঘুমানোর সময় তুলতুলে সুতি কাপড়ের চাদর ও বালিশ ব্যবহার করুন। হালকা পোশাক পরিধান করুন যা তাপ শোষণ করে না এবং শরীর ঠান্ডা রাখে।
৭. গাছের ছায়া ও ছাদে পানি:
বাসার আশপাশে গাছ থাকলে তা প্রাকৃতিকভাবে ছায়া দেয়। পাশাপাশি ছাদে সকালে বা বিকেলে পানি ছিটিয়ে দিলে তাপমাত্রা কমে আসে।
৮. ঘরের রঙ:
যদি সম্ভব হয়, ঘরের দেওয়াল বা ছাদের রঙ হালকা করুন। হালকা রঙ সূর্যের তাপ শোষণ কম করে।
পরিবেশ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরাঞ্চলে ঘনবসতি ও কংক্রিটের প্রভাবের কারণে গরম আরও বেশি অনুভূত হয়। এসি সবার নাগালে না থাকলেও সচেতনভাবে কিছু ঘরোয়া ব্যবস্থা নিলে তাপ থেকে খানিকটা স্বস্তি পাওয়া সম্ভব।
এই প্রাকৃতিক ও সহজ পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ ছাড়াই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।