অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি

সরকারি কর্মচারীদের এক ঘণ্টা কর্মবিরতি শুরু

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে সচিবালয়সহ সারা দেশের সরকারি দপ্তরগুলোতে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলবে। গতকাল বুধবার (২৮ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম এ তথ্য জানিয়েছে।

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত বিতর্কিত অধ্যাদেশটি বাতিল না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। নতুন অধ্যাদেশে চারটি সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই কেবল কারণ দর্শানোর নোটিশের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে, যা কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তারা এই বিধানকে ‘অবৈধ কালাকানুন’ বা ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে এর পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাহার দাবি করছেন।

কর্মচারীদের এই দাবি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তুলে ধরবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে এবং কর্মচারীদের দাবি ও মঙ্গলবারের আলোচনার বিষয়বস্তু তাকে জানানো হয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা বর্তমানে জাপান সফরে থাকায় তার দেশে ফেরা (৩১ মে) পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই বিষয়টি তার কাছে উপস্থাপন করা হবে।

ঐক্য ফোরামের নেতারা আশা করছেন, সরকারের উচ্চমহলে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি ইতিবাচক সমাধান আসবে। মো. বাদিউল কবীর বলেন, “আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।”

কর্মচারী নেতারা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এড়াতে এবং আসন্ন কোরবানির ঈদ ও বাজেট ঘোষণার সময়কে বিবেচনায় রেখে কর্মবিরতির সময়সীমা সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন হাসপাতাল ও বাজেট সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন কর্মবিরতি আধা ঘণ্টার বেশি না করেন বা আরও কম সময় পালন করে সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম অধ্যাদেশটি বাস্তবায়িত হলে কী কী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, তা বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম তাদের আন্দোলনকে ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের লোকজনের কাজ’ বলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা কেবল অধ্যাদেশটির বিরুদ্ধেই আন্দোলন করছেন।

Leave a Reply

scroll to top