বাংলাদেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস হবে না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।
আজ চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) অনুষ্ঠিত ৮৮তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, “বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় উন্নয়নশীল দেশ। আমরা বন্ধুত্বের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তুলি। তবে আমাদের ভূখণ্ডের প্রতিটি ধূলিকণা রক্ষায় আপসহীন থাকব—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”
তিনি আরও বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আজ জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও গৌরবের প্রতীক। সংকট মুহূর্তে এই বাহিনী অতীতে যেমন দায়িত্ব পালন করেছে, ভবিষ্যতেও তেমনি দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্বে অটল থাকবে।”
আধুনিক বিশ্ব বাস্তবতায় সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে এয়ার চিফ মার্শাল বলেন, “চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রযুক্তিনির্ভর যুদ্ধ কৌশলে সজ্জিত হতে হবে। সেই লক্ষ্যে ইন্ডিজেনাস ক্যাপাসিটি বিল্ডিংসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, এতে একদিকে বাহিনীর সক্ষমতা যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে পরনির্ভরশীলতা হ্রাস পাচ্ছে এবং মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।
নবীন কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজ থেকে তোমাদের কাঁধে অর্পিত হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। সততা, একাগ্রতা, কর্তব্যবোধ ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে তোমরা জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতের যুদ্ধে জয়লাভের জন্য তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বা জয়েন্টনেস অপরিহার্য।”
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও বন্ধুপ্রতিম বিভিন্ন দেশের ক্যাডেটরা অংশ নেন। এতে বিএমএর আন্তর্জাতিক মর্যাদা আরও সুদৃঢ় হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানে কৃতী ক্যাডেটদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিমানবাহিনী প্রধান। এছাড়া অনুষ্ঠানে সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, ক্যাডেটদের অভিভাবক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবাহিনীর প্রধানের বক্তব্যের বরাত দিয়ে আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ ও মহামারির মতো সংকটে দেশীয় প্রশাসনের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে।