ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে প্রকাশ্যে এসেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নারী সংগঠন ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। নানা জল্পনা-কল্পনার পর সংগঠনটি তাদের শাখা কমিটির নেতৃত্ব ঘোষণা করেছে।
নতুন নেতৃত্বে ছাত্রী সংস্থা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবিকুন্নাহার তামান্না, যিনি উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক। সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোছা: আফসানা আক্তার, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসিক।
সংগঠনের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না জানান, “ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে ক্যাম্পাসে আমরা কাজ শুরু করার চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই সময়ের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী সংস্থার প্রাথমিক কাঠামো গঠন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে শাখা সভানেত্রী ও সেক্রেটারির দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চালু করবো।”
সেক্রেটারি আফসানা আক্তার বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ ছাত্রী সংগঠন। ১৯৭৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের সংগঠন ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রী সংস্থার কার্যক্রমের রয়েছে বিরাট ইতিহাস। অতীতে ছাত্রী সংস্থা ডাকসুতেও অংশগ্রহণ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা সবচেয়ে বড় ভিক্টিম ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নতুন পরিসরে কাজ শুরু করেছি। আমরা আশা করছি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ঢাবি প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন ইনশাআল্লাহ।”
প্রতিক্রিয়া ও প্রেক্ষাপট
ছাত্রী সংস্থার প্রকাশ্যে আসা নিয়ে ক্যাম্পাসে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শিবিরের এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। তবে ছাত্রী সংস্থা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও কল্যাণের জন্য অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ্যে এসেছে। ২০২৫ সেশনের জন্য সভাপতি হিসেবে এস এম ফরহাদ এবং সেক্রেটারি হিসেবে মহিউদ্দিন খান মনোনীত হয়েছেন। এই কমিটি ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
ছাত্রী সংস্থার এই পুনরায় সক্রিয়তা ক্যাম্পাস রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের প্রতিক্রিয়া কিভাবে unfolds হয়, তা সময়ই বলে দেবে।